By: Daily Janakantha
ব্যাটিং ব্যর্থতায় এ্যান্টিগায় বিবর্ণ বাংলাদেশ
খেলার খবর
17 Jun 2022
17 Jun 2022
Daily Janakantha
মোঃ মামুন রশীদ ॥ ৪ বছর আগে যেমনটা ছিল তার চেয়ে উন্নতি ঘটেনি। এ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে কেমার রোচের পেস তোপে ৪৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। এবারও সেই রোচের আঘাতে শুরুতে যে ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ দল সেটা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ৬ ব্যাটার শূন্য রানে সাজঘরে ফেরার পরেও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের দৃঢ়তাপূর্ণ অর্ধশতকে বড় লজ্জা এড়ালেও মাত্র ১০৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররাই সব উইকেট তুলে নিয়েছেন। পরে বাংলাদেশের পেসাররাও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন এবং বেশকিছু সুযোগ হাতছাড়া না করলে হয়তো বাংলাদেশ দলও প্রথম দিনশেষে একটা ভাল অবস্থানে থাকতে পারত। দারুণ সতর্ক হয়ে ব্যাট চালিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ উইকেটে ৯৫ রান তুলেছে। দেড় বছর পর টেস্টে ফেরা বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটারদের। ১২ ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে ১ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। মাত্র ৮ রানে পিছিয়ে থাকলেও হাতে ৮ উইকেট থাকায় বেশ ভাল অবস্থানেই আছে স্বাগতিক ক্যারিবীয়রা।
উইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে ব্যাটিং নিয়েই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা বাংলাদেশ দলের। কারণ মিডলঅর্ডারের ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহিম নেই, বিকল্প হিসেবে চিন্তা করা ইয়াসির আলী রাব্বিও ছিটকে গেছেন। আর দীর্ঘদিন ফর্মে নেই মুমিনুল হক। টস জিতে তাই সফরকারীদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় উইন্ডিজরা। ক্যারিবীয় পেসারদের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের করুণ দশা হয়েছে শুরু থেকেই। প্রথম ওভারেই শূন্য রানে ফেরা তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের পথ অনুসরণ করে রিক্ত হাতে মাঠ ছেড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল, নুরুল হাসান সোহান, মুস্তাফিজুর রহমান, খালেদ আহমেদ। এক ইনিংসে ৬ শূন্যের ঘটনা এ নিয়ে টেস্ট ইতিহাসে ৭ বার ঘটল। এক ইনিংসে টেস্ট ক্রিকেটে এটাই সর্বাধিক শূন্য। সেই বিশ্বরেকর্ড বাংলাদেশ দল ৩ বার করল। কোন দলই দ্বিতীয়বার এই লজ্জায় পড়েনি। সে কারণে টানা দুই টেস্টে ৬ ব্যাটার শূন্য রানে আউট হওয়ার লজ্জাও বাংলাদেশের। গত মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসেও বাংলাদেশের ৬ ব্যাটার শূন্য রানে আউট হন। এমন লজ্জার মধ্যে ওপেনার তামিম ইকবালের ৪৩ বলে ৪ চারে ২৯ এবং সাকিবের ২৮তম অর্ধশতক ছিল ব্যতিক্রমী ব্যাটিং প্রদর্শনী। তামিম মুশফিকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ৫ হাজার টেস্ট রান পূর্ণ করেন। সাকিব তৃতীয় দফায় অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেই ৬৭ বলে ৬ চার, ১ ছয়ে ৫১ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন। আর তাতেই একশ’ পেরিয়েছে বাংলাদেশ। রোচ ইনজুরি থেকে ফিরেই যেভাবে শুরু করেছেন সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সফরকারীরা। রোচের ২ উইকেটের পর বাকি কাজটা ৩টি করে উইকেট তুলে নিয়ে সেরেছে আলজারি জোসেশ ও জেইডেন সিলস। এছাড়া মেয়ার্স নেন ২ উইকেট।
ক্যারিবীয় পেসারদের কাছে নাজেহাল হওয়ার পর বাংলাদেশের পেসাররাও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। বিশেষ করে দীর্ঘ দেড় বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে মুস্তাফিজ উইন্ডিজ দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্রেথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেলকে তেমন সুযোগই দেননি ভালভাবে ব্যাট চালানোর। এমনকি মুস্তাফিজ ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ব্রেথওয়েটকে প্রায় শিকার করেই ফেলেন। কিন্তু মুমিনুল ক্যাচটি নিতে পারেননি। টানা ৫ ওভার মেডেন দেন মুস্তাফিজ-সৈয়দ খালেদ। তবে এই উইকেটে কিভাবে ব্যাট চালাতে হবে সেটি দেখিয়েছেন ক্যারিবীয় দুই ওপেনার। অতি সতর্কতার সঙ্গে উইকেটে টিকে থেকেছেন তারা। আর তাই ইনিংসের ৩১তম বলে প্রথম রানের দেখা পেয়েছে তারা। ১৫ ওভারে ১৫ রান তুলে চা বিরতিতে যায় স্বাগতিক দল। চা বিরতির পর কিছুটা চড়াও হতে শুরু করেন ব্রেথওয়েট আর ক্যাম্পবেল। দ্রুত রান এসেছে মেহেদি হাসান মিরাজের অফস্পিন আর সাকিবের বাঁহাতি স্পিনে। ইনিংসের ২৬তম ওভারে মুস্তাফিজই প্রথম সাফল্য এনেছেন। তার বল ডিফেন্স করলেও তা শেষ পর্যন্ত স্টাম্পে আঘাত করলে বোল্ড হয়ে যান ক্যাম্পবেল। ৭২ বলে ১ চার, ১ ছয়ে মাত্র ২৪ রান করেছেন তিনি। ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর আরও ২৮ রান যোগ করেন ব্রেথওয়েট রেমন রেইফার। তবে রেইফারকে (২৬ বলে ১১) কট বিহাইন্ডে তুলে নেন এবাদত হোসেন। এরপর এনক্রুমাহ বোনার যোগ দিয়ে দিন শেষ করেছেন বিপদ ছাড়াই। প্রায় দুই সেশনে ৪৮ ওভার ব্যাট চালিয়ে ২ উইকেটে মাত্র ৯৫ রান করেছে উইন্ডিজ। কিন্তু তারা এমন সতর্ক হয়ে খেলার সুবাদে মাত্র ৮ রানে পিছিয়ে, হাতে আছে ৮ উইকেট। ইতোমধ্যেই এ্যান্টিগুয়াতে প্রথম দিন শেষে ব্যাকফুটে চলে গেছে বাংলাদেশ। ব্রেথওয়েট ৪২ আর বোনার ১২ রানে ব্যাট করছেন।
The Daily Janakantha website developed by BIKIRAN.COM
Source: জনকন্ঠ