By: Daily Janakantha
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের এক যুগপূর্তি আজ
অন্য খবর
14 Jun 2022
14 Jun 2022
Daily Janakantha
আজাদ সুলায়মান ॥ লাগেজ থেকে গায়েব হওয়া মাল চব্বিশ ঘণ্টার ভেতর ফিরে পেয়েছেন নরসিংদীর মাসুদ। বেল্ট এরিয়া থেকে হারানো লাগেজ হাতে পেয়ে আনন্দে কেঁদেছেন চট্টগ্রামের মাসুমা, আর ডলার, আইফোন, ল্যাপটপের মতো মূল্যবান সামগ্রী হারানোর পর ফিরে পাবেন অক্ষত- তেমনটি বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিল সাভারের মামুদ আলীর, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার হালিমের, নগরকান্দার সুনাম উদ্দিনের।
এসবের চেয়েও মূল্যবান জিনিস সোনা ও হেরোইন উদ্ধারে রয়েছে নজিরবিহীন সাফল্য। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এভাবেই অসাধ্য সাধন করেছে যেই সংস্থা- সেটা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। আজ মঙ্গলবার এই বিশেষ ফোর্সের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আজ এর সদর দফতরে উদ্যাপিত হবে এ বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বন্দরের দীর্ঘ দিনের পরিবহন ব্যবসায়ী ও গাড়ির চালক গোলাপ মিয়া জানিয়েছেন, এক যুগ আগে বিমানবন্দর আর আজকের বিমানবন্দরের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। এক সময় এখানে টাউট-বাটপার-দালাল আর চোরাকারবারিদের দাপটে যাত্রী সাধারণ ছিল অসহায়। আতঙ্ক ছিল কে, কখন প্রতারণা আর চৌর্যবৃত্তির শিকার হন। এখন সেটা কল্পনাও করা যায় না। থেমে গেছে যাত্রী হয়রানির মতো অপরাধ। বিমানবন্দরে ফেলে যাওয়া ডলার ও পাসপোর্ট খুঁজে বের করে সেটা যাত্রীর কাছে স্ব-উদ্যোগে পাঠিয়ে দিয়েছে এপিবিএন, এমন নজির অসংখ্য। এখন নেই মাদক কারবারি ও ডলার ব্যবসায়ীদের উৎপাত। বলা যায়, গোটা বিমানবন্দরকেই এখন যাত্রীদের জন্য নিরাপদ করে তোলা হয়েছে। এপিবিএনের ক্যামেরার আওতাভুক্ত এরিয়ায় কেউ কোন অপরাধ করে কিংবা ভুলবশত মাল হারিয়ে ফেললেও সেটা ফিরে পাওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে এপিবিএন।
বলা চলে, গোটা বিমানবন্দরের অপরাধীদের কাছে এপিবিএন এখন মূর্তমান আতঙ্ক। দেখলেই আঁতকে ওঠে অন্যায় ও অনৈতিক সুবিধাবাদীরা। তাদের নির্মূল করে বিমানবন্দরকে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ করে তোলা হয়েছে।
২০১০ সালের এই দিনে মাত্র ১১শ’ দক্ষ, কর্মঠ ও চৌকস জনবলের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয় এই ইউনিট। কিন্তু শুরুতেই সংস্থাটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে দীর্ঘদিন ধরে জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা চোরচালানি ও অনৈতিক সুবিধাবাদী দালাল চক্রের। ধীরে ধীরে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করে গোটা বিমানবন্দরের চিহ্নিত অপরাধীদের কাছে মূর্তমান আতঙ্কে পরিণত হয় এয়ারপোর্ট আমর্ড পুলিশ। এখন এই ফোর্সের নেতৃত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যদার কর্মকর্তা মোঃ রাশিদুল ইসলাম খান। মূলত, তার সাহসী ও দৃঢ় পদক্ষেপেই বিগত এক যুগে তিল তিল করে একটি নির্ভরযোগ্য সংস্থায় পরিণত হয়েছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ।
জানতে চেয়েছিলাম বিগত দিনে এই বিমানবন্দরের মূল চ্যালেঞ্জ কি ছিল। বললেন, পৃথিবীতে মানুষকে শৃঙ্খলায় রাখাটাই কঠিন কাজ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে মোকাবেলা করা, তাদের নজরদারিতে রাখাটা সবার জন্যই কঠিন কাজ। তবে অর্পিত দায়িত্ব হিসেবে বলা যায়, গতানুগতিক পুলিশিং ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে আইকাও রুলে পুলিশিং করাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিমানবন্দরে কাজ করতে হয় বহু সংস্থা ও প্রতিনিধির সঙ্গে। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায়, সর্বোচ্চ সতর্ক ও সংযতের সঙ্গে সব কূল রক্ষা করেই যাত্রী অধিকার নিশ্চিত করতে হয়। তবে দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অধিক দর্শনার্থী।
The Daily Janakantha website developed by BIKIRAN.COM
Source: জনকন্ঠ