By: Daily Janakantha
এ্যাথলেট এ্যানির গল্প
ক্যাম্পাস
11 Jun 2022
11 Jun 2022
Daily Janakantha
মানব সমাজ আজ যে ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে সে ভিত্তি তৈরিতে নারীর ভূমিকা অপরিসীম। তাইতো সমাজের সকল বাধা উপেক্ষা করে নারীরা এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে সাফল্য পাওয়া নারীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তেমনি এক ছুটে চলা নারীর কথা বলব আজ। লিখেছেনÑ শিলমুন নাহার মুন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বঙ্গবন্ধু বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২০ এ সেরা এ্যাথলেট হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। তার নাম রোয়াইদা হক এ্যানি।
নরসিংদী সদরের উত্তর সাটির পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা মোঃ ওবায়দুল হক এবং মা নাছিমা হক। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করতেন। এমনকি স্কুলের সকল দৌড় প্রতিযোগিতায় সবসময় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। স্কুলের গ-ি পেরিয়ে ক লেজে গিয়ে পড়াশোনার চাপে খেলাধুলার দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়নি রোয়াইদার। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ২০১৬ সালে ভর্তি হন বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদে। অনেকদিন খেলাধুলা থেকে দূরে থাকার কারণে খেলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু পশুপালন অনুষদেও এনিম্যাল ব্রিডিং এ্যান্ড জেনেটিকের অধ্যাপক ড. মোঃ আজহারুল হকের অনুপ্রেরণায় আবারও অংশগ্রহণ করেন সে বছরের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়। আবারও শুরু হলো পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রীড়া জীবনের নতুন অধ্যায়। প্রতি বছরই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জিতে নেন অনেক পুরস্কার। এ বছর তিনি বঙ্গবন্ধু বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তিনটি ইভেন্টে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং মেয়ে ক্যাটাগরিতে সেরা এ্যাথলেট হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই তিনটি ইভেন্ট হলো ১০০ মি., ২০০ মি. ও ৪০০ মি. দৌড়। এছাড়াও ১০০ মিটার দৌড়ে ১ম হওয়ায় তাকে দ্রুততম মানবী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এর পূর্বেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিনি সেরা এ্যাথলেট হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বাকৃবিতে পোল্ট্রি সাইন্সে এম. এস. করছেন। সেরা এ্যাথলেট হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে রোয়াইদা হক বলেন, ‘ছোট বেলা থেকেই আমার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ ছিল। উচ্চমাধ্যমিক এর সময় পড়াশোনার চাপে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। অতঃপর আমার অনুষদের শিক্ষক আজহারুল হক স্যারের অনুপ্রেরণায় আবার বিশ^বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি এবং প্রায় প্রতি বছরই আমি বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ী হই। কিভাবে প্রতিযোগিতায় সেরা হলেন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সবসময় খেলার এক সপ্তাহ আগে আমি অনুশীলন করতে শুরু করি। তবে এবার এনএসটি ফেলোশিপের জন্য ঢাকায় থাকার কারণে তেমনভাবে অনুশীলন করতে পারিনি। কঠোর আত্মবিশ^াস ও সাহসিকতার মাধ্যমে আমি চূড়ান্ত পর্যায়ে আসতে পেরেছি। খেলাধুলায় অংশগ্রহণকে পরিবার কিভাবে দেখে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার সবসময়ই আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। বিশেষত আমার বাবা। আমার বড় বোন লুৎফা হক লাভলী প্রতিবারই খেলার আগের দিন ক্যাম্পাসে এসে আমাকে সাহস জোগায়। মেয়ে হয়েও খেলাধুলা বা চলাফেরায় আমার পরিবার কোনদিন আমাদের কোন বাধা দেয়নি। পরিবারের অনুপ্রেরণায় আমি আজ এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি। রোয়াইদা হক ভবিষ্যতে একজন সৎ চাকরিজীবী হতে চান। পরিবারের সকলকে গর্বিত করতে চান তাঁর সাফল্যময় গৌরবগাথা দিয়ে।
The Daily Janakantha website developed by BIKIRAN.COM
Source: জনকন্ঠ