২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে আনোয়ারার মেয়ে তাজনীন মেহেজাবীন চৌধুরী। ১৩০০ নম্বরের পরীক্ষায় সে পেয়েছে ১২৩৭ নম্বর।আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মেহেজাবীন স্থানীয় আনোয়ারা সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়। শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ফলাফলে তার এই অর্জনের তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়।অসাধারণ এই অর্জনে উচ্ছ্বসিত পুরো পরিবার, শিক্ষক মহল ও এলাকাবাসী। গ্রামে বইছে উৎসবের আমেজ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনন্দন বার্তার বন্যা।মাত্র তিন বছর বয়সে বাবাকে হারান মেহেজাবীন। শৈশব থেকেই জীবনযুদ্ধে লড়াই করে বড় হয়েছেন মায়ের ছায়াতলে। মা শাহীন আক্তার একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। বাবাহীন মেয়েকে একাই আগলে রেখে গড়ে তুলেছেন সাহস ও মমতায়।মেয়ের সাফল্যে গর্বিত মা বলেন, ‘বাবা হারা মেয়েকে অনেক কষ্টে বড় করেছি। ওর অনেক শখ পূরণ করতে পারিনি, কিন্তু ও কোনোদিন অভিযোগ করেনি। আজ আমার মেয়ের কৃতিত্বে আমি শুধু গর্বিত মা নই, পুরো আনোয়ারা গর্বিত।’নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে মেহেজাবীন বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি বোর্ডে প্রথম হবো। নির্বাচনী পরীক্ষার পর কিছু কো-কারিকুলার কার্যক্রমে অংশ নিই, তাতে একাডেমিক পড়ায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিলাম। আবার রমজানে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম, তখন সহপাঠীরা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, আর আমি বিছানায়। তবু আল্লাহর রহমতে এই ফল করতে পেরেছি।’তিনি আরও বলেন, ‘আমি কখনো দিনে ৫-৬ ঘণ্টার বেশি পড়িনি। শারীরিক অসুস্থতা আর বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার কারণে ফল আরও ভালো হতে পারত। আশা করেছিলাম ১২৫০ এর ওপরে পাবো।’মেহেজাবীনের স্বপ্ন, বড় হয়ে বিচার বিভাগের একজন দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে কাজ করবেন।আনোয়ারা সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বেসরকারিভাবে আমরা তার ফলাফল জানতে পেরেছি। তার এই অর্জন আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য গর্বের।’সিনিয়র শিক্ষক আজগর আলী বলেন, ‘আমরা আগেই জানতাম সে ভালো কিছু করবে। সবসময় পরিশ্রম করেছে, মেধা ও নিষ্ঠায় কখনো কমতি ছিল না। সে যে সাফল্য ছিনিয়ে আনবে, তা আমরা বিশ্বাস করতাম।’এসকে/আরআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর