নারী শিক্ষকের মাতৃত্বকালীন ছুটি সংক্রান্ত বিষয়ে অশোভন মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেওয়া চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) আবদুর রহমান ভূঁইয়াকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় বদলি করা হয়েছে।বুধবার (৯ জুলাই) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক অফিস আদেশে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর না করলে তাঁকে ১৬ জুলাই ২০২৫ থেকে ‘তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ)’ হিসেবে গণ্য করা হবে।অফিস আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, এই বদলি ‘প্রশাসনিক কারণে’ এবং এতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে। আদেশটি জারি করেন মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-০১) মোঃ সাজ্জাদ হোসেন।ঘটনার সূত্রপাত আনোয়ারা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাজনীন নাহারের মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদনের পর। ওই শিক্ষিকার স্বামী আনুষ্ঠানিকভাবে ছুটির আবেদন উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিলে অভিযোগ রয়েছে, অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়া মন্তব্য করেন, ‘বাচ্চা নিতে হবে কেন?’ যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।এই মন্তব্য নারী কর্মীদের প্রতি অবমাননাকর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে অভিহিত করেন অনেকে। সময়ের কণ্ঠস্বর-এ সংবাদটি প্রকাশের পর বিষয়টি সরকারের উচ্চমহলে পৌঁছে যায় এবং তদন্ত সাপেক্ষে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের শিক্ষক সমাজ এই মন্তব্যকে ‘অপেশাদার, অবমাননাকর ও লজ্জাজনক’ হিসেবে উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ‘এই ধরনের মনোভাব যিনি লালন করেন, তিনি নারী সহকর্মীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে পারেন না। শিক্ষাক্ষেত্রে সমতা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এ ধরনের মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি।’ভুক্তভোগী শিক্ষিকার স্বামী বলেন, ‘একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন অশোভন মন্তব্য কখনোই প্রত্যাশিত নয়। আমি বিষয়টি লিখিতভাবে বিভিন্ন দফতরে জানিয়েছিলাম। আজকের এই শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত সেই অভিযোগেরই ফল।’এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, ‘কিসের ভিত্তিতে বদলি করা হয়েছে আমি নিশ্চিত নই। তবে বেশ কিছুদিন আগে শিক্ষক হয়রানির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা এসেছিল।’
Source: সময়ের কন্ঠস্বর