চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় পারিবারিক কবরস্থানে যাতায়াতের চলাচলের রাস্তা কেটে নালা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে হাইলধর ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের এক নারী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নের খাসখামা গ্রামে।ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আনিসুল ইসলাম জানান, তিনি গত ৩০ জুন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে এবং এর আগে ২৬ জুন আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগে বলা হয়, হাইলধর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য সাজিয়া সুলতানা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই কবরস্থানে যাওয়ার রাস্তাটি কেটে সেখানে নালা নির্মাণ করেন। এ সময় রাস্তার পাশে থাকা সীমানা প্রাচীরও ভেঙে ফেলা হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দীর্ঘদিন ধরে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। তিনি উপজেলার আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগেরও একজন সদস্য। তার স্বামী হুমায়ুন কবির খাসখামা গ্রামের বাসিন্দা হলেও, তিনি নিজে সিরাজগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তার বাবা গাজী শাহজাহান আলী সিরাজগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি এবং মা আসমা বেগম সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কমিশনার ও মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।ভুক্তভোগী আনিসুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির উপর দিয়েই এলাকাবাসীর চলাচল। এ সুযোগ নিয়ে এক পক্ষ পরিকল্পিতভাবে ইউপি সদস্যকে ব্যবহার করছে। আগেও একাধিকবার অনুমতি ছাড়া আমাদের কবরস্থানের জায়গায় কাজ করা হয়েছে। এবারো ভোরে তার উপস্থিতিতে রাস্তা কেটে নালা নির্মাণ করা হয়।’তিনি অভিযোগ করেন, ইউপি সদস্যকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘ক্ষমতা আছে, যা ইচ্ছা তাই করবো, পারলে ঠেকান।’ পরে ইউপি সদস্য নিজ ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ভুক্তভোগী পরিবারকে ‘দুষ্কৃতিকারী’ বলে আখ্যায়িত করেন। যদিও পরবর্তীতে ভিডিওটি মুছে ফেলা হয়।এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সাজিয়া সুলতানা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি কোনো রাস্তা খুঁড়িনি, নালাও নির্মাণ করিনি। আমি সেখানে যাইওনি। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির এমন আচরণ দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার। তারা দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’উল্লেখ্য, এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনাস্থলের (কাজী বাড়ি) পাশে পূর্বে থেকেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলেও তা এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মানুষ বন্ধ করে দেওয়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে একপর্যায়ে ওই রাস্তা কেটে নালা নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।এসকে/এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর