অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর শেরে বাংলা থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ।সোমবার (২৩ জুন) শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার এ আবেদন করেন। এ বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত ৩টি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক ৩ প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। রবিবার (২২ জুন) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।মামলার অভিযোগ করা হয়, ২০০৯ সালে তৎকালীন সামরিক শাসকদের সহায়তায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ এর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর তা পাকা-পোক্ত করার জন্য তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে যে সংসদ নির্বাচনী পদ্ধতি চালু ছিল তা বাতিল করান।২০১৪ সালে শেখ হাসিনা সহ তার সরকার অবৈধভাবে শপথ নেওয়ার পর অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে তিনিসহ তার মন্ত্রিপরিষদ, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ক্যাডাররা বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীদের অপহরণ করা, গুম, গুরুতর জখম, হত্যা ও বিভিন্ন উপায়ে নির্যাতন শুরু করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আসামি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একে এম নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেন।এর আগে, রবিবার (২২ জুন) রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে সাবেক এই সিইসিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।বিগত ৩টি ‘বিতর্কিত’ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে গত রোববার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছে বিএনপি। মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। একইসঙ্গে, ওইসব নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ৩ সাবেক সিইসিসহ অজ্ঞাতপরিচয় মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পৃথকভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছে দলটি।২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। বিরোধী দলগুলোর দাবি অনুযায়ী, অধিকাংশ ভোট আগের রাতেই সম্পন্ন হয়ে যায়। নির্বাচনে তারা মাত্র সাতটি আসনে জয়লাভ করে, আর সেই নির্বাচন পরিচিতি পায় ‘নিশিরাতের নির্বাচন’ হিসেবে।এই বিতর্কিত নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন কে এম নুরুল হুদা। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর