“হয় স্বাক্ষর দেন, নইলে থানায় চলেন” এমন হুমকি দিয়ে চায়ের দোকানে বসিয়ে জোরপূর্বক আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার কাছ থেকে দায়িত্ব পত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন স্থানীয় জাতীয়তাবাদী যুবদলের আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য ফিরোজ খাঁন (তাপস)। এমন অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান নিজেই।ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে আমতলী উপজেলা পরিষদ সড়কের পাশে শ্যামলের চায়ের দোকানে। এ সময় আরও দুই ইউপি সদস্য মাসুদ, জসিমসহ যুবদল নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।চেয়ারম্যান মিঠু মৃধা বলেন, “গত ১৬ জুন থেকে ফিরোজ খাঁন আমাকে পরিষদে যেতে দিচ্ছেন না। অফিসে গেলেই মারধর ও মিথ্যা মামলার হুমকি দিচ্ছেন। আমি তিন দিন ধরে অফিসে যেতে পারছি না তার ভয়ে।”তিনি আরও জানান, “বৃহস্পতিবার চায়ের দোকানে বসা অবস্থায় ফিরোজ খাঁন ও তার লোকজন এসে আমাকে একটি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি রাজি হইনি। তখন তিনি হুমকি দেন, ‘হয় স্বাক্ষর দেন, নইলে থানায় চলেন।’ পরে আমি নিরুপায় হয়ে স্বাক্ষর দেই। চিঠিতে কী লেখা আছে তাও আমাকে পড়তে দেয়া হয়নি।জানা গেছে, উক্ত পত্রে উল্লেখ রয়েছে— “চেয়ারম্যান অসুস্থতার কারণে ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফিরোজ খাঁনকে (তাপস) ১৯ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদান করা হলো।একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “চেয়ারম্যান দোকানে বসা ছিলেন। ফিরোজ খাঁনসহ কয়েকজন এসে তাকে চাপ দিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর করান। তিনি রাজি না হলে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়। পরে চেয়ারম্যান বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করেন।”চায়ের দোকানদার শ্যামল বলেন, “চেয়ারম্যান আমার দোকানে বসা ছিলেন। এরপর কিছু লোকজন এসে তার সঙ্গে কথা বলেন। পরে কী হয়েছে আমি জানি না।অভিযোগ অস্বীকার করে ফিরোজ খাঁন বলেন, “চেয়ারম্যান অসুস্থ, তাই তিনি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।”তবে কেন চায়ের দোকানে বসে দায়িত্ব নিলেন—এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।আমতলী উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক মোঃ কবির ফকির বলেন, “ঘটনাটি আমার জানা নেই। ফিরোজ খাঁনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি সংগঠন বিরোধী কিছু করে থাকলে জেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, “বিষয়টি আমাদের জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রোকনুজ্জামান খান বলেন, “চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানা নেই। এ বিষয়ে কোনো লিখিত চিঠিও আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর