কুমিল্লার লাকসামে শ্বশুরকে হত্যার দায়ে পুত্রবধূ মোছাঃ তাসলিমা আক্তারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ছুরি দিয়ে শ্বশুরের বুকের মাঝখানে আঘাত করেন এবং পরে ব্লেড দিয়ে কেটে দেন তাঁর পুরুষাঙ্গ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শ্বশুর মো. চাঁন মিয়ার। প্রায় ১১ বছর পর বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এই হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা করেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মোছাঃ ফরিদা ইয়াসমিন।রায়ে পুত্রবধূ তাসলিমাকে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষে দায়িত্ব পালন করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া, যিনি রায়ের পর সন্তোষ প্রকাশ করেন।মামলার নথি অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে ২০১৪ সালের ১০ জুলাই রাতে, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আশকামতা গ্রামে। নিহত চাঁন মিয়া (৭০) ছিলেন স্থানীয় একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন। তাঁর ছেলে বিল্লাল হোসেন ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাসলিমা আক্তার, যিনি তখন ৩০ বছরের ছিলেন, একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানার পর শ্বশুর চাঁন মিয়া তাকে সতর্ক করলে তাসলিমা ক্ষিপ্ত হয়ে নিজ ঘরে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন।অভিযোগপত্রে বলা হয়, ১০ জুলাই রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১ জুলাই ভোররাতের মধ্যে কোনো এক সময় এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়ার ভাষ্য মতে, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, নিষ্ঠুর এবং মানবতা বিবর্জিত এক হত্যাকাণ্ড। ১১ বছর পর বিচারের রায়ে দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান হলেও স্থানীয়দের মধ্যে রয়ে গেছে সেই রাতের বিভীষিকার স্মৃতি।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর