বরিশাল জেলার গৌরনদী পৌর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে হাট-বাজারসহ জনস্বার্থে সরকারের পক্ষ থেকে স্থাপন করা হয়েছে ময়লা ফেলার প্লাস্টিকের ডাস্টবিন। যার উদ্দেশ্য ছিলো পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার মাধ্যমে নাগরিকদের একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ উপহার দেওয়া। কিন্তু বাস্তব চিত্র তার উল্টো। পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের দখিনাঞ্চলের ব্যবসায়ী কেন্দ্র ঐতিহ্যবাহী টরকী বন্দর। এ বন্দরে বেশ কয়েকটি স্থানে বসানো হয়েছে ডাস্টবিন। ডাস্টবিনের গায়ে বড় করে লেখা ‘আমাকে ব্যবহার করুন’। সেই ডাস্টবিন আজ নিজেই পড়ে আছে ময়লা আবর্জনার স্তুপের মধ্যে। এমন চিত্র দেখা গেছে টরকী বন্দরের কীটনাশক সার ব্যবসায়ী মের্সাস খান স্টোরের পিছনে। দু’টি প্লাস্টিকের ময়লা ফেলার ডাস্টবিন একসাথে একটি মধ্যে একটি এবং তার পাশেই আরও একটি ডাস্টবিন উল্টো করে ময়লার ভাগাড়ের মধ্যে ফেলে রাখা হয়েছে। চারপাশে ময়লার দুর্গন্ধ, নোংরা পানি। ডাস্টবিনের অবস্থান এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে পৌঁছানোই মানুষের কষ্টকর, ব্যবহারের অনুপযোগী। ফলে সাধারণ মানুষ ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা না পেয়ে টরকী বন্দরের যেখানে-সেখানে ফেলছে ময়লা। এতে করে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, বাড়ছে ডেঙ্গু ও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি।এ বিষয়ে টরকী বন্দরের কীটনাশক সার ব্যবসায়ী মো. লিটন খান অভিযোগ করে বলেন, ‘ময়লার ডাস্টবিনে ময়লা না ফেলে আমার দোকানের পিছনে ময়লা ফেলে যায়। এছাড়া রাতের আধারে একটি ময়লা ফেলার ডাস্টবিন ময়লার মধ্যে উল্টো করে ফেলে রেখেছে। এছাড়া রাতের আধারে কোন এক স্থান থেকে ময়লার ডাস্টবিন এনে উল্টো করে ফেলে রেখে গেছে।’পরিবেশ নিয়ে কাজ করা গণমাধ্যম কর্মী ও সোস্যাল ওয়ার্কার সোয়েব সিকদার বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রায় ৬৭ টি পরিবারের বাস এখানে। আমরা চাই এখানে কেউ ময়লা না ফেলুক। ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি এই রাস্তাটির আমরা সংস্কার চাই। আশা করি উপজেলা প্রশাসন এটি সুরাহা করবেন।’তিনি আরও বলেন, ‘পৌরসভা কর্তৃক যে ডাস্টবিনগুলো দেওয়া হয়েছে, তার সঠিক ব্যবহার করছে না কেউই। মানছে না আইন, যে যার মতো করে ময়লা আবর্জনা এখানে সেখানে ফেলে রাখছে, যার ফলে বৃষ্টি হলেই ময়লা আটকে যায় এই সরু রাস্তাটির ড্রেনের গোড়ায়। প্রতিদিন এই রাস্তায় শত মানুষের যাতায়াত থাকে। বৃষ্টি হলে ময়লা আটকে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, এর কোনো নিরসন মনে হয় নেই। বৃষ্টির দিনে আমরা কয়েকজন এই ময়লা নিজের হাত দিয়ে ছাড়িয়ে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করি।’স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, বরং সরকারের অর্থ অপচয়ের একটি করুণ উদাহরণ। প্রকল্পের নামে কাগজে-কলমে যে উন্নয়ন দেখানো হয়, মাঠপর্যায়ে তার কোনো সুফল জনগণ পাচ্ছে না। জনগণের করের টাকায় কেনা এই ডাস্টবিনগুলো যদি সঠিকভাবে বসানো না হয়, নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয়, তাহলে এমন উদ্যোগ বরং জনদুর্ভোগ বাড়াবে, উন্নয়ন নয়, হবে অনউন্নয়ন।এ বিষয়ে জানতে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরীকে তথ্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর