চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গত দুই দিনের টানা ভারী বর্ষণে আবারও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ফেনাপুনি, দুয়ারু, পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড, মায়ানী ইউনিয়নের পূর্ব মায়ানী গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এতে আবারও চরম বিপর্যয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।জানা গেছে, সোমবার রাতভর টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকেছে। পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ভেঙে গেছে খৈয়াছড়া ইউনিয়নের দুয়ারু গ্রামের একটি সড়ক। এছাড়া ওসমানপুর ইউনিয়নে সিডিএসপির বাঁধ ভেঙে ভেসে গেছে শতাধিক মৎস্য খামার। ক্ষতির মুখে পড়েছে কয়েকশ খামারি।দুয়ারু গ্রামের বাসিন্দা নাদিম মাহমুদ বলেন, ‘রাস্তাটি কিছুদিন আগে পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায়। সোমবার রাতভর ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভাঙা জায়গার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি প্রবাহিত হতে থাকলে রাস্তাটি ভেঙে খালে পরিণত হবে।’ তাদের দাবি, ‘দ্রুত রাস্তাটি যেন সংস্কার করা হয়।’ওসমানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানান, ‘সিডিএসপির বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ভেসে গেছে কয়েক হাজার একর মাছের খামার।’ বঙ্গোপসাগরের ভাঙন থেকে রক্ষা করতে ১৯৯৪ সালে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিএসপি) আওতায় ১১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু চলতি ভারী বর্ষণে এই বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার একর মাছের খামার।করেরহাট এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম জানান, ‘বিএডিসি’র অপরিকল্পিত খাল খননে হুমকিতে এখানকার বসতভিটা ও ফসলি জমি।’ সম্প্রতি করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের তিলকের খালের মোল্লা বাড়ি ও এর আশপাশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। চলতি বছর বাংলাদেশ এগ্রিকালচার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের আওতায় সোনাইছড়ি ও তিলকের খালের প্রায় ৪ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়। খাল খনন অপরিকল্পিত হওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।মিরসরাই পৌরসভার বাসিন্দা মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘আগে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা দেখা দিত না। এখন সামান্য বৃষ্টি হলে পৌরসভার ২ নম্বর ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। মূলত মানুষ অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি-ঘর নির্মাণের কারণে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে এমনটা হচ্ছে।’এদিকে আবুতোরাব এলাকায় আবুতোরাব-গোভনীয়া খালের পানিতে ভেসে গেছে আবুতোরাব-বড়তাকিয়া সড়ক। প্লাবিত হয়েছে সরকারটোলা এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িঘর।মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘টানা দুদিনের বৃষ্টিতে সবজি ও আউশ ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। যদি বৃষ্টি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকে তাহলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোমাইয়া আক্তার বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে জলাবদ্ধতার খবর পেয়েছি। আমরা হত-দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের তালিকা করে তাদের খাদ্য সহায়তা দেব।’এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর