ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান তার সার্বভৌমত্ব ও জনগণের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসনের জবাবে ‘দৃঢ় ও নির্দ্বিধায় ব্যবস্থা’ নেবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত আলী বাহরাইনি।মঙ্গলবার (১৭ জুন) জেনেভায় জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক এক অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে বাহরাইনি বলেন, ‘ইরানি শহর, আবাসিক এলাকা, জ্বালানি অবকাঠামো ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন এবং এটি যুদ্ধাপরাধের শামিল।’তিনি উল্লেখ করেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি)-এর সদস্য এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি রাষ্ট্র, অথচ এই দেশের ওপর লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।বাহরাইনি আরও বলেন, ‘এই হামলাগুলোতে নারী ও শিশুসহ বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন। ইসরায়েল স্পষ্টভাবে বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইনকে চরমভাবে অমান্য করার সামিল। গাজা এবং ফিলিস্তিনে তাদের আগের আচরণে যেমনটা দেখা গেছে, এখানেও সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে।’ইরানি রাষ্ট্রদূতের অভিযোগ, ইসরায়েল একটি পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত কোন চুক্তির আওতায় নেই। তাই এই দেশটির কোনো নৈতিক বা বৈধ অধিকার নেই অন্য দেশের শান্তিপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর।তিনি বলেন, ‘যারা নিজেরা আন্তর্জাতিক চুক্তির বাইরে, তাদের পক্ষ থেকে নীতির কথা বলা ভণ্ডামির শামিল।’আলী বাহরাইনি দাবি করেন, ইরান যখন পারমাণবিক চুক্তি নবায়ন ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চালাচ্ছিল, তখনই ইসরায়েল এই হামলা চালায়—যার উদ্দেশ্য ছিল কূটনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করা।তিনি বলেন, ‘ইরান এই সংঘাত শুরু করেনি। বরং আলোচনার পথ রুদ্ধ করতেই আমাদের ওপর আঘাত হানা হয়েছে।বাহরাইনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েল ও এর মিত্রদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। না হলে আন্তর্জাতিক আইন বারবার লঙ্ঘিত হবে, এবং ভবিষ্যতে এর পরিণতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।’তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনকে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রধান ভিত্তি’ হিসেবে দায়ী করেন।আরডি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর