চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘ড্রোন’ বানিয়ে দেশব্যাপী সাড়া জাগানো মো. আশির উদ্দিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান।সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে পুঁইছড়ি ইউনিয়নের লোসাইপাড়া এলাকায় আশির উদ্দিনের বাড়িতে যান ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধি দল।বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী-এর নেতৃত্বে উক্ত প্রতিনিধি দলটি মোহাম্মদ আশির উদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎ করেন।এসময় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-এর পক্ষ থেকে তার প্রতি শুভেচ্ছা ও সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন। বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী কারিগরি সহযোগিতা হিসেবে তারেক রহমান-এর পক্ষ থেকে মোহাম্মদ আশির উদ্দিনের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। পাশাপাশি তার আরও বেশি দক্ষতা অর্জনের জন্য সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।এসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কত প্রতিভাবান ক্ষুদে বিজ্ঞানীর জন্ম হচ্ছে। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এরা অঙ্কুরে ঝরে যায়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলে আশির উদ্দিন ড্রোন আবিষ্কার করেছে। বিশ্বে নানাদিক থেকে এই ড্রোনের কদর রয়েছে। আশিরের এই আবিষ্কার গোটা জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এতোটাই অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ হয়েছেন। সেজন্য আমরা আজকে বিএনপি পরিবার এই প্রত্যন্ত এলাকায় এসেছি। এই প্রতিভাগুলোকে মূল্যায়ন করার জন্য সারাদেশে কেউ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে, কেউ প্রকৌশলের ক্ষেত্রে, কেউ সংগীতে, কেউ শিল্পে আবার কেউ সাহিত্যে নানাভাবে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন, তাদের সাথে নানাভাবে যোগাযোগ রাখেন ও খোঁজখবর নেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।এসময় তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা প্রত্যন্ত এলাকার একটি প্রতিভাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এসেছি। এই প্রতিভা যেন অঙ্কুরে ঝরে না যায়, এই প্রতিভা যেন বিকশিত হয়, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সেটাই হলো আমাদের প্রত্যাশা। আশির উদ্দিনরা যেন ঝরে না যায়, এটাই হচ্ছে তারেক রহমানের মূল লক্ষ্য। তার গবেষণার জন্য, পড়ালেখার জন্য ভবিষ্যতে যা যা করতে হয় তা আমাদের দলের পক্ষ থেকে করা হবে।মোহাম্মদ আশির উদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎকালে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, সংগঠনটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন ও জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি।চট্টগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে তিনি ডিপ্লোমা পাস করা আশির উদ্দিন পুঁইছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম পুঁইছড়ি ছমদ আলী সিকদার পাড়া এলাকার মো. শাহাব উদ্দিনের ছেলে। গ্রামে তার ‘এয়ারক্রাফট মেনটেইন্যান্স ল্যাব’ নামের ১৫ বর্গফুট আয়তনের একটি ল্যাব আছে। ২০১৬ সাল থেকে শুরু করে বিমানের প্রায় ৬ শতাধিক মডেল তৈরি করেছিলেন তরুণ আশির। এজন্য সামরিক বাহিনী তাকে সংবর্ধনা ও সম্মানি দেয়। তিনি এরইমধ্যে বানিয়েছেন বিভিন্ন মডেলের ১০টি ড্রোন।ড্রোন নির্মাতা মো. আশির উদ্দিন বলেন, ইতোপূর্বে আমি ১০টি ড্রোন তৈরি করে সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছি। প্রত্যেকটা ড্রোনে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০ কিলোমিটার রেঞ্জ দেওয়া হয়েছে। ১০ কেজি ওজনের একটি ড্রোনের দাম মানভেদে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ ২০ কেজি ওজনের ড্রোন ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। একটি ড্রোন তৈরিতে ৬ জনের টিমের ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে বলে জানান আশির উদ্দিন।প্রসঙ্গত, আশির উদ্দিন ২০১৫ সালে পুঁইছড়ি ইজ্জতিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৮ সালে মাস্টার নজির আহমদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর চট্টগ্রামের সামশুন্নাহার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে তিনি ডিপ্লোমা পাস করেন। পরিবারের দেওয়া বিভিন্ন সময়ের হাত খরচের টাকা দিয়ে নানা ধরনের ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র নিয়ে আকাশে উড়া নানা ধরনের বিমান নিয়ে বানানোর স্বপ্ন বুনেন আশির। ২০১৭ সালে প্রথম বিমান তৈরি করে স্বপ্ন গভীর হলেও তা ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নেয়। বিগত বছরে তার তৈরি বিমান আকাশে উড়াতে দেখে এলাকার জনগণ ও বন্ধু-বান্ধবসহ সকলে বেশি উৎসাহিত করে। এরপর একে একে বেশ কিছু ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম হন তিনি।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর