দীর্ঘদিনের অবহেলা আর প্রশাসনিক হয়রানির বিরুদ্ধে এবার রাস্তায় নেমেছে আনোয়ারার ডুমুরিয়া ও রুদুরা গ্রামের সাধারণ মানুষ। ইউনিয়ন বিভাজনের দীর্ঘসূত্রতা ও প্রশাসনিক জটিলতায় অতিষ্ঠ হয়ে রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার প্রধান সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রায় সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।”আর নয় হয়রানি, চাই ন্যায্য অধিকার” — এমন নানা স্লোগানে মুখর ছিল পুরো এলাকা। বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড হাতে শিশু, নারী, বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মানুষ একযোগে অংশ নেন বিক্ষোভে।স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ডুমুরিয়া ও রুদুরা গ্রাম দুটি আনোয়ারা উপজেলার ৮ নম্বর চাতরী ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হলেও সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন তাদের বাড়ির মাত্র ২০০ গজ দূরে। অথচ যেকোনো সেবা নিতে তাদের যেতে হয় প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে চাতরী ইউনিয়ন পরিষদে। এতে বাড়ছে যাতায়াতের খরচ, নষ্ট হচ্ছে সময়, আর সেবাগ্রহণে পড়তে হচ্ছে নানা হয়রানির মুখে।ডুমুরিয়ার বাসিন্দা সরোজ আহমেদ ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, “যেখানে সদর ইউনিয়ন অফিস মাত্র দুই মিনিটের হাঁটার পথ, সেখানে আমাদের গাড়ি ভাড়া করে দূরের অফিসে যেতে হয়। এ ভোগান্তি দিনের পর দিন সহ্য করা যাচ্ছে না।”মানববন্ধনে অংশ নেওয়া রুদুরা গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, “মহিলাদের অনেক সেবার জন্য দূরের ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে নানা কাজে আমাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”বছরের পর বছর এই বৈষম্য লালন করে আসছে প্রশাসন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও সমাধান আসেনি। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উঠান বৈঠক, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর আন্দোলনের এই ধাপে এসে পৌঁছেছে এলাকাবাসী।এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা জুবাইরুল আলম বলেন, “প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতা আর রাজনৈতিক উদাসীনতায় আমরা বছরের পর বছর বঞ্চিত। এই বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে আমরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।”বিক্ষোভ শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয়রা। এ সময় আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, “আপনাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হবে। আপনাদের একতা ও ন্যায্য দাবি সত্যিই প্রশংসনীয়।”এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর