রাতের অন্ধকারে মোবাইল ফোনের এক কল, তারপর নিখোঁজ একটি মানুষ। সেই মানুষের মুক্তিপণ দাবির জন্য গোটা এলাকায় থমথমে সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এভাবে অপহরণের এক নাটকীয় ঘটনা ঘটল, যেখানে হারানো জীবন ফিরিয়ে আনলো সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম।বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের স্লুইস গেট এলাকা থেকে অপহরণের শিকার জহির উদ্দিনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।বুধবার রাত ৯টার সময় উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের বইক্যারপাড়া এলাকায় মোবাইলে ফোন আসে। কল করেছিল এক অপরিচিত ব্যক্তি, যিনি বালু উত্তোলন সম্পর্কিত কাজের কথা বলে জহির উদ্দিন মিন্টুকে ডেকে নেন। এরপর ঘটে চমকে ওঠার মতো ঘটনা — জহির উদ্দিনকে একদল সশস্ত্র বন্দুকধারী অপহরণ করে নিয়ে যায়। তার সঙ্গে থাকা ছোট ভাই মো. সোহেলকেও আটক করে অপহরণকারীরা। পরে তাকে বাড়ি থেকে মুক্তিপণের টাকা আনার জন্য ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।সোহেল জানান, ‘মোটরসাইকেলে বইক্যারপাড়া এলাকায় যাওয়ার পর আমাদের ওপর হামলা চালায় অপহরণকারীরা। ৭-৮ জন সশস্ত্র লোক মারধর শুরু করে। তারা আমাদের ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে বলে। টাকা না দিলে প্রাণহানির হুমকি দেয়।’অপহরণকারীদের কাছে আটকে থাকা জহির উদ্দিন মিন্টুর ভাগ্যে যেন অন্ধকারই ছায়া ফেলেছিল। অপহরণকারীরা তাকে অজ্ঞাত এক স্থানে নিয়ে যায়, সেখানে মুক্তিপণ না দেয়ার শর্তে বন্দুকের নীচে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়ার খবর পেয়ে রাতেই সেনাবাহিনী-পুলিশের যৌথ অভিযান শুরু হয়। গোপন সূত্র ও তথ্যের ভিত্তিতে কাঞ্চনা ইউনিয়নের স্লুইস গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে জীবিত উদ্ধার করা হয় জহির উদ্দিনকে।সাতকানিয়া সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন পারভেজ বলেন, ‘অপহরণকারীরা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। তবে মুক্তিপণ দেওয়ার আগেই আমরা এবং পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ভোরে জহির উদ্দিনকে উদ্ধার করেছি। এখন তাদের এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম জানান, ‘পরিবারের অভিযোগ পেয়ে রাতভর অভিযান চালানো হয়। সাড়ে ৮ ঘণ্টার মধ্যে সফলভাবে অপহৃতকে উদ্ধার করা হয়।’এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর