ঈদুল আযহা উপলক্ষে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া মানুষে মুখর হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পারকি সমুদ্র সৈকত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খোঁজে সকাল থেকেই হাজারো পর্যটকের পদচারণায় জমজমাট হয়ে ওঠে সৈকত এলাকা। শিশু, তরুণ, প্রবীণসহ সব বয়সের মানুষই ভিড় করছেন এই জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে।তবে এই উপচে পড়া ভিড়ের মাঝেই দেখা দিয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি না থাকায় অনেক পর্যটক অনিরাপত্তার অনুভূতি নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই আগেভাগেই সৈকত ত্যাগ করছেন।ফটিকছড়ি থেকে আসা পর্যটক শামীমা আক্তার বলেন, ‘পারকি সমুদ্র সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। তবে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার দিকে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে মানুষ এখানে আসতে নিরুৎসাহিত হবে।’স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেন জানান, ‘ঈদের সময় আমাদের ব্যবসা ভালো হয়। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে যদি পর্যটক কমে যায়, তাহলে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হব। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।’এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন টহল পরিচালিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়মিত আসছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পারকি সৈকত চট্টগ্রামের অন্যতম সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হলেও সেখানে নেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বছরের পর বছর ঈদ ও অন্যান্য মৌসুমে একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন পর্যটকরা।উল্লেখ্য, সৈকতে নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, নেই ট্যুরিস্ট পুলিশের কোনো স্থায়ী চৌকি, এমনকি রাতযাপনের জন্য নেই কোনো আবাসিক সুবিধা। ফলে সন্ধ্যার পর সৈকতটি হয়ে পড়ে জনশূন্য ও নিস্তব্ধ, যা অনেকের কাছেই আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে।পূর্বের কিছু ঘটনায় এ আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে। এর আগে সৈকত এলাকায় একাধিকবার ছিনতাই ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যটক নারীর স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়া এবং এক সেনা সদস্যের কাছ থেকে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেলের হেলমেট ও ২৯ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।এসব ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ায় পর্যটকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভীতি। অনেকেই মনে করছেন, যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে পারকি সৈকতের জনপ্রিয়তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রকৃতির সৌন্দর্য থাকলেও যদি মানুষের আস্থা হারিয়ে যায়, তবে সেই ক্ষতি পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।’এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর