বাঁশখালী উপকূলীয় বেড়িবাঁধ রক্ষায় ২০১৫-১৮ অর্থবছরে ২৫১ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ২০১৫ সালের ১৯ মে প্রকল্পটি একনেকে পাস হওয়ার পর বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদীর পাড়ে ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই বাঁধ নির্মাণে কয়েক দফা সময় ও ব্যয় বেড়ে ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। কচ্ছপ গতিতে করা ওই প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালে প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়। মাত্র দুই বছরের মাথায় ঘূর্ণিঝড় ছাড়া শুধু সমুদ্রের জোয়ারের আঘাতেই ২০২৪ সালে তিন কিলোমিটারের বেশির ভাগ বেড়িবাঁধ ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে এবং তলিয়ে গেছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের করা একই স্থানগুলোতে আবারও মেগাপ্রকল্পের জন্য ২০২৪-২৭ অর্থবছরে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাঁশখালীতে নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৮৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।এদিকে নতুন প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে মঈনিয়া যুব ফোরাম নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রবিবার (৮ জুন) বিকেলে সংগঠনটির বাঁশখালী শাখার উদ্যোগে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতের খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল পয়েন্টে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইফতিখারুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও সাবেক সভাপতি মাওলানা নাঈম উদ্দিন হাসানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন উক্ত সংগঠনের উপদেষ্টা ইলিয়াস রেজবী এবং উপদেষ্টা মাওলানা আমির হোসেন।এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনাম উল্লাহ ফয়সাল, রায়হান চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, আরফাতুল ইসলাম, জিহান চৌধুরী ও আকিব উদ্দিন প্রমুখ।মানববন্ধনে মঈনিয়া যুব ফোরামের উপদেষ্টা মাওলানা আমির হোসেন বলেন, ‘বারবার প্রকল্পের নামে বরাদ্দ হয়, লুটপাট হয়, কিন্তু বেড়িবাঁধের অস্তিত্ব থাকে না। নতুন প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে করা হলে উপকূলবাসী রক্ষা পাবে। বেড়িবাঁধ টেকসই হবে। ২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটি সাগরের বুকে বিলীন গেছে খড়কুটোর মতই।’সংগঠনের উপদেষ্টা ইলিয়াস রেজবী বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি পূর্বের প্রকল্পে কাজ পাওয়া দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের পুনরায় নতুন প্রকল্পের কাজ বন্টন করা হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও আমাদের মাথায় নুন রেখে বরই খেতে শুরু করেছে। তারা চায় ঠিকাদারদের মাধ্যমে কাজ হোক। কারণ, তারা কমিশন খেতে পারবে।’মানববন্ধন বানচাল করার হুমকি পেয়েছেন জানিয়ে ইলিয়াস রেজবী বলেন, ‘আজকে মানববন্ধন না করার জন্য একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে আমাদেরকে হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে অবগত করেছি। তারা আমাদেরকে নির্বিঘ্নে প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। তাদের আশ্বাসের পর আমরা মানববন্ধন করার সাহস পেয়েছি। এখন আমরা দুর্নীতিমুক্ত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন ঠিকাদারকে বন্টন করা টেন্ডার বাতিল করে ২০২৪ সালে অনুমোদিত প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর