উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে পটুয়াখালীতে গত তিনদিন ধরে থেমে থেমে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আকাশ কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরসহ বড় নদীগুলো বেশ উত্তাল হয়ে আছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। বাতাসের তেমন চাপ না থাকলেও অমাবশ্যার জোয়ের প্রভাবে জোয়ারে নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় দৈনিক দু’দফা প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার শত শত পরিবার। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে জেলার গলাচিপা উপজেলার পানপট্রি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে ৩টি গ্রাম। রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের অন্তত ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্ধি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে শত শত পরিবার। ভেসে গেছে প্রায় শতাধিক মাছের ঘের ও পুকুর। দুর্গত এসব এলাকার মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও সিপিপি। এদিকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া সী-বিচ সড়ক উদ্বোধনের আগেই সমুদ্রের ঢেউয়ের তাণ্ডবে ধ্বসে পড়েছে। রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে সমুদ্র থেকে উঁচু ঢেউ উঠে আসে। ভাটার টান না থাকায় পানির স্তর দ্রুত বাড়তে থাকে। কোথাও কোথাও দেড় থেকে দুই ফুট পর্যন্ত পানি প্রবেশ করে। গত ১৮ ঘণ্টায় কয়েক দফা জোয়ারের পানিতে গ্রামের রাস্তাঘাট, বসতঘর, খাল-বিল ও মাছের ঘের ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত পরিবার ও তাদের জীবিকা। রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন, আবহাওয়ার সকল পরিস্থিতির ওপর গভীর পর্যবেক্ষণ রয়েছে। পানিবন্ধি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতিসহ ক্ষতিগ্রস্তদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। এদিকে নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া আকারে বয়ে যেতে পারে। তাই পটুয়াখালীর পায়রা সহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকল মাছধরা নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর