আজ বৃহস্পতিবার, ২৯ মে—আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শান্তিরক্ষার ভবিষ্যৎ’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। চার দশকের বেশি সময় ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে শান্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়া বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা আজ গৌরবময় সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। হাড় কাঁপানো শীত, মরুভূমির তীব্র গরম, দুর্গম পাহাড়ে বিপদ সংকুলতা উপেক্ষা করে মানুষকে নিরাপদ রাখতে জীবনবাজি রাখছেন তারা। সেবা পৌঁছে দিচ্ছেন সংঘাতপূর্ণ এলাকার বিপন্ন মানুষের মাঝে। বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাত্রা শুরু ১৯৮৮ সালে, ইরান-ইরাক যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে সামরিক পর্যবেক্ষক দলে সেনাবাহিনীর ১৫ সদস্য পাঠানোর মাধ্যমে। এরপর থেকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও পুলিশ—সব বাহিনীর সম্মিলিত অংশগ্রহণে বাংলাদেশ আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের অন্যতম প্রধান অংশীদারে পরিণত হয়েছে।এই দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশ ও অঞ্চলে ৬৩টি মিশনে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের ১০টি দেশে ৫ হাজার ৮১৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন ৪৪৪ জন নারী। যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে এসব নারী শান্তিরক্ষীর সক্রিয় অংশগ্রহণ বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের ইতিবাচক অবস্থান তুলে ধরছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১১ বছরের মধ্যে চার বছর জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২০১৯ সালে তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ ২০২০ সালে উঠে আসে দ্বিতীয় স্থানে। পরবর্তী দুই বছর ২০২১ ও ২০২২ সালে প্রথম স্থানে অবস্থান করে। জানা গেছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এই বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। বিশ্বের সব শান্তিরক্ষীর অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে।দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া বাণী দেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধপীড়িত ও সংঘাতময় দেশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। প্রধান উপদেষ্টা বাণীতে বলেন, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা সংঘাতময় বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও জরুরি মানবিক সহায়তা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের কর্মদক্ষতা ও নিষ্ঠা যুদ্ধপীড়িত সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করেছে; আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের মর্যাদাকে করেছে আরও সমুন্নত। এসকে/আরআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর