দেশের বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত সন্তোষজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘খাদ্য নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের কোনো ঝামেলায় পড়তে হবে না। ইতিমধ্যে সারাদেশে খাদ্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। আশা করছি, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।’বুধবার (২৮ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ, মজুদ এবং বিতরণ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘চলতি মৌসুমে সরকার ১৪ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করবে। এবার ফলন ভালো হওয়ায় আমরা আশাবাদী, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।’তিনি জানান, বর্তমানে দেশের খাদ্য মজুদ রয়েছে ১৫ লাখ মেট্রিক টন, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ৩ লাখ মেট্রিক টন বেশি। ‘এই মজুদ প্রতিনিয়ত খরচ হচ্ছে আবার যোগও হচ্ছে। তাই এই ভারসাম্য ধরে রাখাই মূল চ্যালেঞ্জ।’গমে আমদানি নির্ভরতা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য গম। দেশে গমের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ টন, কিন্তু উৎপাদন হয় মাত্র ১০ লাখ টন। ফলে ৬০ লাখ টনের মতো ঘাটতি থাকে, যা বেসরকারি খাত থেকেই মূলত পূরণ হয়।’তিনি জানান, রেশনিংয়ের জন্য বছরে ৭ থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টন গম প্রয়োজন হয়। বর্তমানে সরকারি গুদামে গমের মজুদ রয়েছে প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন।চাল আমদানির প্রয়োজন হবে কি না—এ প্রসঙ্গে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘গত বছর চাল আমদানি করতে হয়েছিল। তবে এবার আমন ধানের ফলনও যদি ভালো হয়, তাহলে হয়তো আমদানি করার প্রয়োজন হবে না।’ময়মনসিংহ বিভাগের অবকাঠামো নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই বিভাগে খাদ্য মজুদের ধারণক্ষমতা কিছুটা কম। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) তাহমিনা আক্তার, আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা আবু নাঈম মো. শফিউল আলম, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদিরসহ শেরপুর, নেত্রকোনা ও জামালপুর জেলার প্রশাসক ও খাদ্য কর্মকর্তারা।উল্লেখ্য, চলতি বোরো মৌসুমে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৯৩৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৪৬ মেট্রিক টন ধান ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ২৫ হাজার ৮২৭ মেট্রিক টন, এর মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর