লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে চিংড়ি ধরার আড়ালে চলছে জলজ প্রাণের নির্বিচার নিধন। সূক্ষ্ম জাল দিয়ে প্রতিদিন ধরা হচ্ছে গলদা ও বাগদা চিংড়ির পোনা। এই নিষিদ্ধ পোনা আহরণে নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেমন হুমকির মুখে, তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিংড়ি উৎপাদন পড়ছে চরম সংকটে।কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট ও নাছিরগঞ্জ এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, শতাধিক নৌকায় জেলেরা মশারির মতো সূক্ষ্ম জাল ফেলে পোনা ধরছেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই অবৈধ কাজ চালাতে যারা বড় ভূমিকা রাখছেন, তারা হচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা, যারা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে পারছেন। ফলে প্রতিদিনই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পোনা শিকারের ঘটনা ঘটছে।এক স্থানীয় জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই কাজগুলো বড় লোকেরা চালায়। আমরা ছোটরা তো বাধা পাই, কিন্তু তাদের তো কেউ বাধা দিতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরকেও জাল ফেলতে হয়।’পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ বাংলাদেশ’ এর সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবু বলেন, ‘চিংড়ির পোনা ধরা অব্যাহত থাকলে নদীর বাস্তুতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে শুধু চিংড়ি নয়, অন্যান্য জলজ প্রাণীরও অবস্থা দুঃখজনক হবে। ভবিষ্যতে মেঘনার চিংড়ি উৎপাদনও ব্যাপক হ্রাস পাবে।’লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, ‘পোনা ধরার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। এরপরেও তারা কীভাবে ধরছে সেটা জানা নেই। তবে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি এবং দ্রুতই অভিযান চালাবো।’স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, ‘শুধু অভিযান চালিয়ে নয়, পোনা ধরার প্রবণতা বন্ধ করতে হলে জেলেদের জন্য টেকসই বিকল্প জীবিকা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে প্রজনন মৌসুম হোক বা না হোক, চিংড়ি উৎপাদনের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর