রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেননি। কিন্তু সম্পন্ন দেখিয়ে স্বাক্ষর করে ঠিকাদারকে বিল উত্তোলন করার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রকৌশলী। এমন অভিযোগে বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী ফাহাদ বিন মাহমুদের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি।মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ লিখিত অভিযোগ জমা দেন মো. আমিরুল হক এমরুল কায়েস নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগে তিনি নিজেকে ছনুয়া উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাঁশখালীর শেখেরখীল ইউনিয়নের মৌলভীবাজার থেকে ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী সড়কের নুরু মিয়ার মিয়ার দোকান থেকে আবাখালী পর্যন্ত অংশের রাস্তার এইচবিবি দ্বারা সংস্কার কাজের জন্য ৭৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। সড়কের বিভিন্ন অংশে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রাক্কলনে মাটি ভরাটের প্রস্তাব করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে মোট বরাদ্দ থেকে মাটি ভরাটের জন্য ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। জলকদর খাল ঘেঁষে উক্ত রাস্তার অবস্থান হওয়ায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরি তহবিল থেকে উক্ত রাস্তায় স্কাভেটর দিয়ে মাটি ভরাট করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর উক্ত রাস্তায় মাটি ভরাট না করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভরাট করা মাটি সমান করে ব্রিকসলিং কাজ সম্পন্ন করে। এমতাবস্থায় ভরাট কাজ না করেও মাটির জন্য বরাদ্দ করা ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ৫৪৪ টাকা বিল তুলে নেন ঠিকাদার। উপজেলা প্রকৌশলী ফাহাদ বিন মাহমুদ রাস্তার কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে স্বাক্ষর করেন।অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সড়ক নিরাপত্তার কাজের অংশ হিসেবে সড়কের শুরু ও শেষে দুইটি নামফলক এবং একটি কি.মি পোস্ট প্রাক্কলনের অন্তর্ভুক্ত থাকলেও উক্ত সড়কে একটি নামফলকও বসানো হয়নি। এমনকি কি.মি পোস্টও স্থাপন করা হয়নি। এ বিষয়ে ছনুয়া উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মো. আমিরুল হক এমরুল কায়েস বলেন, নিম্নমানের ইট, যথেষ্ট বালি না দেওয়া ও মাটি ভরাট না করায় সংস্কার কাজের বছর না যেতেই উক্ত রাস্তার ইট জলকদর খালের গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এসব অনিয়মের খবর স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। আমি এলাকার সচেতন ব্যক্তি হিসেবে এসব বিষয় তুলে ধরে দুদকে অভিযোগ দিয়েছি।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী ফাহাদ বিন মাহমুদ এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, ‘মাটির কাজ না হলে এইচবিবি হলো কেমনে?’ এই কথা বলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-পরিচালক মুসাব্বির আহমেদ বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি অধিকতর তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হবে।উল্লেখ্য, বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী ফাহাদ বিন মাহমুদের বিরুদ্ধে এর আগেও প্রফেসর আসহাব উদ্দিন সড়ক, ছনুয়া মৌলভী নজরুল ইসলাম সড়ক, মাওলানা আশরাফ আলী সড়ক ও ছনুয়া আছিয়া বেগম সড়কসহ একাধিক সড়কের উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এসব ঘটনায় বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে একাধিকবার সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসে আকস্মিক অভিযানে যায় দুদক। এই অভিযানের কারণে বাঁশখালীর বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং অভিযুক্তদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর