কেরানীগঞ্জের কদমতলী চার লেন সড়কটির প্রস্থ ৯০ ফুট। এর মধ্যে প্রায় ৬০ ফুটই দখল হয়ে আছে। যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে মাত্র ৩০ ফুট সড়ক!সোমবার (২৬ মে) রাত আটটার দিকে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দখল করা অংশে কয়েকশ ভ্যান রাস্তার ওপরে কাপড়, জুতা, ফলসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছে। পাটি বিছিয়ে দোকান রয়েছে শতাধিক। এসব দোকান থেকে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কিছু অসাধু চাঁদাবাজ চাঁদা আদায় করছে।চার লেন এই সড়কটি বুড়িগঙ্গা ২য় সেতুর প্রান্ত থেকে শুরু করে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মিলেছে। সেতু পেরিয়ে কেরানীগঞ্জে ঢুকলেই কদমতলী চার লেন সড়ক। এটি দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের অনেকগুলো জেলায় যাতায়াত করা যায়। সড়কটির শুরুর ২০০ মিটার এরিয়া ৯০ ফুটের জায়গায় ৩০ ফুট হয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে প্রতিনিয়ত বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি হাঁটার জায়গা না পেয়ে শিক্ষার্থী, নারী, শিশুসহ হাজারো পথচারী প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কদমতলী গোলচত্বর থেকে সৈমন্তি টাওয়ার পর্যন্ত দুই শতাধিক ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে আগানগর ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী তারিক ইসলাম ও মর্জিনা বেগম প্রতিদিন ৭০ টাকা করে চাঁদা তুলছেন। সম্প্রতি ওইসব অবৈধ দোকান থেকে মর্জিনার চাঁদা আদায়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সড়কটির অপর পাশে তানাকা ফিলিং স্টেশন থেকে ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার পর্যন্ত আড়াইশ অবৈধ দোকান থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে আলমগীর হোসেন। আদতে সে পুলিশের সোর্স ছিল। এছাড়া একই এলাকায় অবৈধ সিএনজি ও মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড থেকেও চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখান থেকে প্রতিটি যানবাহনের চালকের কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন লোকমান হোসেন ও শহিদ মিয়া নামের দুই ব্যক্তি। এলাকাবাসী জানায়, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে এসব দোকান থেকে চাঁদা তোলার কাজ করতেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেল মেম্বার ও তার অনুসারীরা। পরে নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের পরিচয়ধারী কয়েক নেতাকর্মীর হাতে। এছাড়া এসব দোকানে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দোকানপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করা হয়। চাঁদা তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে লোকমান হোসেন বলেন, ‘আমি কোনো চাঁদাবাজি করি না। সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করি। আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আলমগীর ওরফে চুইল্লা আলমগীর বলেন, ‘সড়কের ফুটপাতে আমার নিজের ব্যবসা রয়েছে। আমি কোনো চাঁদা আদায় করি না। ষড়যন্ত্র করে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।’ কদমতলী সড়কের অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাফিক বিভাগ ঢাকা জেলা দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, ‘ তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি নন।’ সাধারণ মানুষ বলছেন, টিআই মজিবর আসার পর থেকে কেরানীগঞ্জে যানজট সৃষ্টি, অবৈধ দোকানপাট ও সিএনজি স্ট্যান্ড হচ্ছে। কেরানীগঞ্জ কদমতলী প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।পিএম
Source: সময়ের কন্ঠস্বর