চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে দুদকের উপপরিচালক মোবাচ্ছির সাইমনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবু হানিফ দুদক টিমের সঙ্গে ছিলেন।দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, কাজের গুণগত মান বজায় না রাখা এবং কাজ না করে বা নামমাত্র কাজ দেখিয়ে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের তীর মূলত ঠিকাদার এবং প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের দিকে। এই প্রেক্ষাপটেই দুদক সরেজমিনে তদন্তে নেমেছে।উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধান শেষে দুদকের টিম উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের বহুল আলোচিত মাওলানা আশরাফ আলী সড়ক এবং লস্কর মৌলভীপাড়া সড়ক পরিদর্শনে যায়। সেখানে তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের উত্থাপিত অভিযোগগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সড়কের নির্মাণকাজ খতিয়ে দেখেন।এর আগে গত ১৯ মে বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের মাওলানা আশরাফ আলী সড়কের উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে ‘ঠিকাদার পলাতক, প্রকৌশলী নিজেই ঠিকাদারের ভূমিকায়!’— শিরোনামে সময়ের কন্ঠস্বরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।তবে এই অভিযান প্রসঙ্গে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদুল আলম সময়ের কন্ঠস্বর-কে বলেন, ‘আমার তো বিষয়টিকে অভিযান মনে হয়নি। উনারা নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এসেছিলেন। আমাদের উন্নয়ন কাজগুলো কীভাবে হচ্ছে, তা ভিজিট করার জন্য এসেছিলেন। কাজ মনিটরিং করার জন্য এসেছিলেন। বাকিটা দুদকের এডি মহোদয় বলতে পারবেন।’অন্যদিকে, দুদক টিমের সাথে থাকা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবু হানিফ বলেন, ‘আমরা লস্কর মৌলভীপাড়া সড়ক ও মাওলানা আশরাফ আলী সড়ক ভিজিট করেছি। এর মধ্যে লস্কর মৌলভীপাড়া সড়কে তেমন কোনো অসংগতি পাওয়া যায়নি। কিন্তু মাওলানা আশরাফ আলী সড়কে অসংগতি পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী আমাকে প্রতিবেদন দিতে হবে।’এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মোবাচ্ছির সাইমনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।উল্লেখ্য, বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী ফাহাদ বিন মাহমুদের বিরুদ্ধে এর আগেও প্রফেসর আসহাব উদ্দিন সড়ক, ছনুয়া মৌলভী নজরুল ইসলাম সড়ক, ছনুয়া আছিয়া বেগম সড়কসহ একাধিক সড়কের উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এসব ঘটনায় বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে একাধিকবার সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। দুদকের এই আকস্মিক অভিযানে বাঁশখালীর বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং অভিযুক্তদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর