চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পশ্চিম প্রান্তে শুক্রবার (২৩ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আকস্মিক গোলাগুলির ঘটনায় রক্তাক্ত হয় সৈকতের পরিবেশ। সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী আলী আকবর ওরফে ‘ঢাকাইয়া আকবর’ এবং একজন পথচারী। এই হামলার সঙ্গে চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের আরেক পরিচিত নাম ‘ছোট সাজ্জাদ’ গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় সৈকতের ২৮ নম্বর দোকানে ঢাকাইয়া আকবর, একজন নারী ও চার যুবকসহ মোট ছয়জন অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে আসা চার যুবক আকবরকে লক্ষ্য করে অতর্কিত গুলি চালায়। আকবর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও তার শরীরে তিন থেকে চারটি গুলি বিদ্ধ হয়। একই সময় গুলিতে আহত হন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড-এ কর্মরত এক পথচারী, যিনি পরিবারের সঙ্গে সৈকতে বেড়াতে এসেছিলেন।ঘটনার পর তাদের দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, গুলাগুলির সময় ঘটনাস্থলে আকবরের সাথে থাকা ওই নারী হামলাকারীদের সঙ্গে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এছাড়া, এক চা দোকানির শিশুপুত্র গুলিতে আহত হয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হামলাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই হামলার মূল পরিকল্পনায় রয়েছে কারাবন্দি অপরাধী ‘ছোট সাজ্জাদ’-এর অনুসারীরা।তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকাইয়া আকবর ও ছোট সাজ্জাদ একসময় দুর্ধর্ষ অপরাধী বড় সাজ্জাদ হোসেন খানের অনুসারী ছিলেন। তবে সম্প্রতি আকবর ও বড় সাজ্জাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়, যা ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে তার বিরোধকে আরও উসকে দেয়। ছোট সাজ্জাদকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার পেছনে ঢাকাইয়া আকবরের ভূমিকা রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন সাজ্জাদপন্থীরা। সেই শত্রুতার জের ধরেই এই হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ রাজধানীর একটি অভিজাত শপিংমল থেকে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ১০ মে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাকেও।ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের বন্দর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সোহেল পারভেজ সময়ের কন্ঠস্বর-কে বলেন, “রাত ৮টার দিকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে আকবর নামে এক ব্যক্তি ও একজন দর্শনার্থী গুলিবিদ্ধ হন। আকবরের শরীরে একাধিক গুলি লেগেছে। তাদের চমেকে পাঠানো হয়েছে।”তিনি আরও বলেন, “হামলাকারীদের শনাক্তে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখনই নির্দিষ্ট করে কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা বলা যাচ্ছে না।”এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর