বৃষ্টি আসলেই পলিথিন মুড়িয়ে টেবিলের নিচে বসে থাকি তারপরও শরীরের একাংশ বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায়।বৃষ্টি কমলে শরীরের কাপড় খুলে শুকিয়ে তারপর বাসায় যেতে হয়। এমনি আক্ষেপ করে কথা গুলো বলছিলেন গাজীপুরের কোনাবাড়ী বাইমাইলে অবস্থিত সাব পোস্ট মাস্টার রহিস উদ্দিন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পোস্ট অফিসের চালের টিন নেই,তিনবছর ধরে নেই বিদুৎ সংযোগ।দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে এমন জরাজীর্ণ অবস্থায় কার্যক্রম চলছে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে প্রতিষ্ঠিত গাজীপুরের কোনাবাড়ীর একমাত্র সাব পোস্ট অফিসের। যেন দেখার কেউ নেই। জানা যায়, ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া রহমানের শাসন আমলে কোনাবাড়ী বাইমাইল এলাকায় কাশেম কটন মিলস্ এর জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা হয় কোনাবাড়ীর সাব পোস্ট অফিস।প্রতিষ্ঠার পর থেকে অনেকটাই অবহেলায় চলছে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম।এতে নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কাজগপত্র। বৈদ্যুতিক পাখা ও লাইট থাকলেও নেই বিদুৎ সংযোগ। দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে অন্য জায়গা থেকে পোস্ট অফিসের বিভিন্ন ডিভাইস চার্জ দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন পোস্ট মাস্টার রহিজ উদ্দিন।গুরুত্বপূর্ণ এই পোস্ট অফিসের অধীনে ৬টি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস রয়েছে। সবগুলোর কার্যক্রম এখান থেকে পরিচালনা করা হয়।কিন্তু এই সাব পোস্ট অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখার জন্য নেই আসবাবপত্র। অনেক সময় যা নিজেই খুজে পান না পোস্ট মাস্টার।পোস্ট অফিসের এমন বেহাল অবস্থা দেখে সংস্কার দাবী করেন গ্রাহক ও স্থানীয় লোকজন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গ্রাহক বলেন, আমাদের অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আমরা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে থাকি। কিন্তু পোস্ট অফিসের বেহাল দশা দেখে ভয় হয় কখন যেন আমাদের কাগজপত্র গুলো নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা আজগর মিয়া বলেন, বাইমাইল কাশেম কটন মিলসে এই পোস্ট অফিসটি আমাদের ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে। তিনি পোস্ট অফিসটি বাউন্ডারির একদম শেষ মাথায় হওয়ায় সন্ধ্যার সময় কিছু দৃস্কৃতিকারীরা তারা সেখানে নেশায় মগ্ন থাকে।তিনি আরোও বলেন,কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি দ্রুত এই পোস্ট অফিসটি সংস্কার করে গ্রাহকদের সেবার মান বৃদ্ধি করা হোক। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রাশেদা বেগম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই পোস্ট অফিসের এমন অবস্থা দেখে সত্যি কষ্ট হয়। অনেক সময় দেখি রৌদ বৃষ্টিতে ভিজে পোস্ট মাষ্টার কাজ করেন। সরকারি একটা প্রতিষ্টান এভাবে থাকতে পারেনা। এছাড়াও কোনাবাড়ী থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ রফিকুজ্জামান রফিক বলেন, বিগত ১৬ বছর আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এলাকায় বসবাস করতে পারিনি। এলাকায় কোন সামাজিক কাজকর্মও করতে পারিনা।তিনি আরোও বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বাইমাইল পোস্ট অফিসের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।কোনাবাড়ী বাইমাইলে অবস্থিত পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মোঃ রহিস উদ্দিন বলেন, আমি তিন বছর ধরে এখানে এসেছি। কিন্তু পোস্ট অফিসের টিনের চাল নেই, বিদ্যুৎ নেই বৃষ্টিতে ভিজে প্রখর রৌদের গরমে অফিস করতে হয়।ঝড়আসলেই আতংকে থাকি। কখন যেন ভাঙা টিন গুলো শরীরে এসে পড়ে। তিনি বলেন, এই সাব পোস্ট অফিসের অধিনে ৬ টি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস রয়েছে। যেগুলো নীলনগর, কোনাবাড়ী,কাশিমপুর,ভবানিপুর,সারদাগঞ্জ, কড্ডায় অবস্থিত।তিনি আরো বলেন, এই সাব পোস্ট অফিস থেকে জিপি, রেজি: মানি অডার, ইএমটিএস, পিএল আই, বিপিও সেবা প্রধান করা হয়। এবিষয়ে সাভার উপ-বিভাগের পোস্ট পরিদর্শক মোঃ নাইম খান বলেন, কোনাবাড়ী বাইমাইলে অবস্থিত সাব পোস্ট অফিসটি ব্যক্তিমালিকানা জায়গায়। যার কারণে সরকারি ভাবে বরাদ্দের সুযোগ নেই। এটি তারাই সংস্কার করে দিবে। তারপরও আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পোস্ট অফিসটি যেন দ্রুত সংস্কার করা যায় সেই বিষয়ে চেষ্টা করবো।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর