ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হয়েও ব্যতিক্রম নয় দুর্নীতির অভিযোগ থেকে। জ্ঞাত আয়ের বাইরে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবার মামলা করেছে অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. সাইদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী শায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে।দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা–১-এ মামলাটি দায়ের করেন সংস্থার উপপরিচালক মোহাং নূরুল হুদা। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।দুদকের দায়েরকৃত এজাহারে বলা হয়েছে, সাইদুল ইসলাম জ্ঞাত আয়ের বাইরে অর্জন করেছেন ১ কোটি ১৯ লাখ ৪ হাজার ২৪০ টাকার সম্পদ, আর তাঁর স্ত্রী শায়লা আক্তার অর্জন করেছেন ১ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৬ টাকার সম্পদ। উভয়ের সম্পদের উৎস অস্পষ্ট এবং অবৈধ বলেই প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এর আগেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ময়মনসিংহ অফিসে কর্মরত থাকাকালে তিনি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ভুয়া এনওসি ও ব্ল্যাঙ্ক পাসপোর্টের মাধ্যমে জরুরি পাসপোর্ট ইস্যু করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। এই অবৈধ আয়ের মাধ্যমে তিনি পাবনার সাঁথিয়ায় ১০ বিঘার ওপর পুকুর, কাশিয়ানি বাজারে ভবনসহ ১০ শতাংশ জায়গা, ২০ বিঘার ওপর ফার্ম, নরসিংদীতে ২৯ ও ৬৫ শতাংশ জায়গার ওপর কারখানা, উত্তরায় প্লট ও ফ্ল্যাট, বসিলা বেড়িবাঁধের পাশে চন্দ্রিমা হাউজিংয়ে ৫ কাঠার প্লট, শ্যাওড়াপাড়ায় ১৭ কাঠা জমি, মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে ২,২০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং ধানমন্ডিতে দুটি ফ্ল্যাটের মালিক হন। এসব সম্পদ তিনি নিজের ও স্ত্রীর নামে-বেনামে করেছেন।বর্তমানে চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসে পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায়ও ঘুষ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্র ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রামের মুনসুরাবাদ ও চান্দগাঁও পাসপোর্ট অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ঘুষের সুবিশাল সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন ঘটে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন একাধিক প্রভাবশালী কর্মকর্তা।প্রতিটি পাসপোর্ট ফাইলে নির্দিষ্ট ‘হার’ নির্ধারিত রয়েছে বলে দাবি করেছেন দালালদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘুষ বণ্টন হয় উপরমহল পর্যন্ত, যার একটি বড় অংশই সরাসরি যায় পরিচালকের কার্যালয়ে।এই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসে পরিচালক সাইদুল ইসলামের প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। সাইদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ এবং বিদেশে অর্থপাচার সংক্রান্ত তথ্যও যাচাই করা হচ্ছে।তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দুদক নিশ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে, যার তালিকায় আরও চাঞ্চল্যকর নাম যুক্ত হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে।এসআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
সুলতানের আদেশে ঈদ উপলক্ষে বিদেশিসহ ৬৪৫ কয়েদিকে ক্ষমা
সুলতানের আদেশে ঈদ উপলক্ষে বিদেশিসহ ৬৪৫ কয়েদিকে ক্ষমা

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিদেশি নাগরিকসহ ৬৪৫ কয়েদি ক্ষমা পেয়েছেন। তারা বিভিন্ন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাভোগ করছিলেন। বিশেষ ক্ষমাপ্রাপ্তরা Read more

‘ব্যাংক লুটকারীদের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামের মডেল অনুসরণ করবে কি বাংলাদেশ’
‘ব্যাংক লুটকারীদের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামের মডেল অনুসরণ করবে কি বাংলাদেশ’

বুধবার ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিকগুলোর শিরোনামে সাবেক ৭৬৪ কর্মকর্তাকে পদোন্নতির সুপারিশ, ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গ্রাহকদের হয়রানি, শেখ হাসিনার বিচারের Read more

এনবিআর’র নতুন চেয়ারম্যানকে ডিবিএ’র অভিনন্দন
এনবিআর’র নতুন চেয়ারম্যানকে ডিবিএ’র অভিনন্দন

আমরা বিশ্বাস করি, তার নেতৃত্বে দেশের কর খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং কর ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসবে।

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন