নোয়াখালীর সেনবাগ থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় প্রধান আসামি থাকা সত্ত্বেও ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মিজানুর রহমান। বিষয়টি সামনে আসার পর পুলিশ প্রশাসনের অভ্যন্তরে এবং জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে তিনি সাত দিনের ছুটিতে গেছেন।২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট সেনবাগ থানায় বিএনপি নেতা নুরনবী বাচ্চু বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় করেন তৎকালীন ওসি মিজানুর রহমান। মামলায় তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়।সেনবাগ থানার বর্তমান ওসি মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, “এটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে করা একটি মামলা। তদন্ত করছেন এসআই আব্দুর রউফ।”এর আগে মিজানুর রহমান ভালুকা মডেল থানায় পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১৯ মে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমের স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাঁকে কোতোয়ালী থানার ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়। পরদিন ২০ মে মামলার বিষয়টি আলোচনায় এলে তিনি ছুটিতে চলে যান।এ বিষয়ে জানতে ওসি মিজানুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।তবে কোতোয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, “সোমবার রাতে মিজানুর রহমান স্যার যোগ দেন এবং মঙ্গলবার সকালে ছুটিতে যান”জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, “মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তা আমার জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পর আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”দুদকের ময়মনসিংহের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এম এ হান্নান খান বলেন, “একজন এজাহারভুক্ত আসামিকে বিভাগীয় শহরের গুরুত্বপূর্ণ থানায় ওসি হিসেবে পদায়ন অনভিপ্রেত। এতে গোটা বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।”উল্লেখ, এর আগেও ওসি মিজানুর রহমান বিতর্কিত ছিলেন। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে নোয়াখালীর সেনবাগ থানার ওসি থাকা অবস্থায় নানা অনিয়মের অভিযোগে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।জানা গেছে, ওই বছরের ১৯ জানুয়ারি সেনবাগ উপজেলা যুবলীগ নেতা মোজ্জামেল হোসেন রাসেলকে থানায় ডেকে এনে ওসি মিজান নিজের কক্ষে দরজা বন্ধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধর করেন।এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচনা হয়, কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর