ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেঙ্গালুরু ভারী বৃষ্টিপাতের পর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। মুষলধারে বৃষ্টিপাতে শহরটির রাস্তাঘাটে পানি থই থই করছে। সোমবার বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় ১২ বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।মঙ্গলবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রযুক্তি রাজধানী বেঙ্গালুরু শহরের অনেক জায়গায় সোমবার (১৯ মে) ১০০ মিমি (৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা ২০১১ সালের পর সর্বোচ্চ। আঞ্চলিক আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক সিএস পাতিল বলেছেন, বেঙ্গালুরুর জন্য এটি একটি ‘বিরল’ ঘটনা। শহরের বড় বড় রাস্তাও পানির নিচে ডুবে গেছে। তীব্র জলাবদ্ধতা ও যানজট দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করার পাশাপাশি, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সম্পত্তিরও ক্ষতি হয়েছে।বেঙ্গালুরুতে বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানির অফিস রয়েছে, যাদের অনেকেই তাদের কর্মীদের বন্যার কারণে বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে। সোমবার সকালে শহরের অন্যতম প্রধান আইটি করিডোরে অবস্থিত আই-জেড সফটওয়্যার কোম্পানির কম্পাউন্ড দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ৩৫ বছর বয়সী এক নারী কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।কর্তৃপক্ষের মতে, আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মঙ্গলবার আরো প্রাক-বর্ষা বৃষ্টিপাতের জন্য শহরটি উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সিটি কর্পোরেশন ২১০টি বন্যাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করেছে, যেখানে পরিস্থিতির ‘উন্নতি’ করার জন্য তারা দিনরাত কাজ করছে।ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরু। বর্তমানে রাজ্যটি কংগ্রেস শাসিত। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি স্থানীয় সরকারকে অবকাঠামোগত উন্নয়নে লাখ লাখ রুপি ব্যয় করার পরেও শহর ও রাজ্যে বৃষ্টিপাতজনিত সমস্যা মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ করেছে। বিজেপি ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য অবিলম্বে ১০ বিলিয়ন রুপি বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে।তবে রাজ্য সরকার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছে, এগুলো দীর্ঘদিনের সমস্যা। কর্ণাটক রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার সাংবাদিকদের বলেন, “আজ আমরা যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি তা নতুন নয়। বিগত সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে বছরের পর বছর ধরে এগুলো উপেক্ষা করা হয়েছে।” সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেঙ্গালুরুতে বন্যা একটি পুনরাবৃত্তিমূলক ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা আংশিকভাবে শহরের হ্রদ এবং জলাভূমির উপর নির্মাণ এবং দুর্বল নগর পরিকল্পনাকে এই সংকটের জন্য দায়ী করেছেন।এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর