চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় শঙ্খ নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া মোহাম্মদ করিম (২১) নামের এক যুবকের লাশ নিখোঁজের ২৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে।মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে স্থানীয়দের সহায়তায় সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস ও চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মরদেহটি উদ্ধার করে।নিহত করিম কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার ট্যাংখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে।শরণার্থী হিসেবে বেড়ে ওঠা করিম আর পাঁচজন তরুণের মতোই নিজের জীবনটা একটু উন্নত করার স্বপ্ন দেখতেন। জীবিকার খোঁজে তিনি দেড় মাস আগে সাতকানিয়ার কালিয়াইশ ইউনিয়নের পূর্ব কাটগড় গ্রামে আসেন এবং স্থানীয় একটি মুরগির খামারে চাকরি নেন।স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার দুপুরে দিকে করিম ও আরও কয়েকজন গরমে স্বস্তি পেতে শঙ্খ নদীতে গোসল করতে নামেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তারা সাঁতার কাটছিলেন। একপর্যায়ে অন্যরা কূলে উঠে এলেও করিম আর উঠেননি। প্রথমে বিষয়টি কেউ বুঝতে পারেননি। পরে করিমকে দেখতে না পেয়ে সঙ্গীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।খবরটি মুহূর্তেই আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা নদীতে নেমে খোঁজ শুরু করেন। কেউ কেউ হাতা জাল নিয়ে পানিতে নেমে পড়েন। কিন্তু নদীর গভীরতা, স্রোতের গতি ও করিমের অজানা তলিয়ে যাওয়ার স্থান শনাক্ত করতে না পারায় উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।খবর পেয়ে সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। রাতভর চেষ্টা চালিয়েও করিমকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। ঘটনার ২৩ ঘণ্টা পর অবশেষে কালিয়াইশ ইউনিয়নের পূর্ব কাটগড় অংশের শঙ্খ নদী থেকে করিমের নিথর দেহটি উদ্ধার করা হয়।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শঙ্খ নদীর ওই অংশে কোনও ধরনের সতর্কতামূলক চিহ্ন বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। নদীর স্রোত মাঝেমধ্যে হঠাৎ করে বেড়ে যায়। নির্দিষ্ট কোন এলাকায় গভীরতা কতটা, তা সাধারণ মানুষের জানার সুযোগ নেই। ফলে এমন দুর্ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে যাচ্ছে।কালিয়াইশ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ফরিদ বলেন, ‘এখানে নদীর পাড়ে কোনো সাঁতারের নিরাপদ স্থান চিহ্নিত নেই। কেউ কোথায় নামবে, কোথায় নামবে না – তা জানে না। আমার মনে হয় নদীর পাড়গুলোতে কিছু সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড বসানো উচিত।’সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা সিরাজ কুতুবী বলেন, ‘গতকাল নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা উদ্ধার অভিযান শুরু করি। তবে নদীর গভীরতা ও পানির প্রবাহ বেশি থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। আজ চট্টগ্রাম থেকে ডুবুরি দল এসে আমাদের সহায়তায় অংশ নেয়। দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।’এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর