ধরলা অববাহিকায় রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কুড়িগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে তীব্র জলজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে নাগরিক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। জজ কোর্ট, জেলা প্রশাসন (ডিসি অফিস), পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানগামী সড়কে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও সেবাপ্রত্যাশীরা। মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল থেকে এই দুর্ভোগ শুরু হয়।এর আগে সোমবার রাত ৯টার পর থেকে কুড়িগ্রাম শহর ও এর আশেপাশে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মঙ্গলবার সকাল ৯টার প্রতিবেদনে জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা অববাহিকায় ২১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও তিস্তা অববাহিকায় ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।মঙ্গলবার সকালে শহর ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন অলিগলির সড়কে পানি জমে আছে। ভোগান্তি নিয়ে লোকজন গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে। শহরের জজকোর্ট মোড় থেকে এসপি অফিস-ডিসি অফিস সড়কে প্রায় হাঁটু উচ্চতায় জলাবদ্ধতা। ড্রেনগুলো উপচে নোংরা পানি সড়কে উঠে এসেছে। সেই পানি মাড়িয়ে লোকজন পোশাক ভিজিয়ে চলাচল করছে।ডিসি অফিস যাওয়ার শুকনো কোনও পথ অবশিষ্ট নেই। চতুর্দিকে পানি আর পানি। সকাল ১১টায় পানির সমতল ভবনের বারান্দা ছুঁই ছুঁই করছিল।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মচারী বলেন, ‘এই ভোগান্তি তো আজকের নয়। কয়েক বছর ধরে এই অবস্থা চলে। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় যাতায়াত করা যায় না। স্যারেরা তো গাড়িতে করে বারান্দায় নামেন। সাধারণ মানুষ আর আমাদের মতো কর্মচারীদের ভোগান্তি।’ একই অবস্থা জজ কোর্ট চত্বরেও। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তি সয়ে কোর্টে প্রবেশ করছিলেন।টানা বৃষ্টিতে জনজীবনে ভোগান্তি নেমে এসেছে। কুড়িগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য আহসান হাবীব ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জলজটে কুড়িগ্রাম গোটা পৌরসভা। পানিনিষ্কাশনের যুগোপযোগী ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে অফিস–আদালত, রাস্তাঘাট ও বাড়িতে জমেছে হাঁটুপানি। ডিসি অফিস, এসপি অফিস, জজকোর্ট, ফায়ার সার্ভিসে এখন থই থই পানি। সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ।ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভেতরেও পানি ঢুকে রান্নার চুলা ডুবে গেছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন কর্মকর্তা কবির হোসেন।শহর ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফায়ার সার্ভিস চত্বরসহ শহর ও শহরের বাইরের গলিগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার দৈন্যদশাকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, আগামী দুই থেকে তিন দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে দুর্ভোগ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।এফএস
Source: সময়ের কন্ঠস্বর