চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট না থাকলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। চিকিৎসক ও নার্সদের দায়িত্বে গাফিলতি, সময়মতো হাসপাতালে না থাকা এবং প্রাইভেট চেম্বারকেন্দ্রিক মনোযোগকেই এ অবস্থার জন্য দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফারজানা বিথি হাসপাতালের সরকারি বাসায় থাকেন না। রোগীদের দিনে দুইবার ভিজিট করার নিয়ম থাকলেও তিনি ভিজিট করেন কেবল একবার। সকাল ১০টায় দায়িত্ব নেওয়ার কথা থাকলেও সাধারণত আসেন ১১টার দিকে, তাও রোগী দেখেন মাত্র এক-দুই মিনিট করে। অভিযোগ রয়েছে, টিএইচও ও আরএমও উভয়েই স্থানীয় একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে নিয়মিত চেম্বার করেন। হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসকই দেরিতে এসে দুপুর ১টার আগেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের সরকারি ওষুধ না দিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ছে দরিদ্র ও অসহায় জনগণ।হাসপাতালের আবাসিক ওয়ার্ডগুলোর পরিবেশের চিত্রও অত্যন্ত ভয়াবহ। অনেক কক্ষে স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ, নষ্ট ফ্যান, অপরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি সব মিলিয়ে রোগীদের থাকা দায়। করোনাকালে বিত্তবানদের দেওয়া এসি ও ফ্যান থাকলেও তা ব্যবহৃত হচ্ছে টিএইচও, আরএমও ও অফিস কক্ষগুলোতে। রোগীদের ওয়ার্ডে বেশিরভাগ ফ্যান অচল অবস্থায় রয়েছে।জেনারেটর থাকলেও তা কেবল একবার চালানো হয়, বিদ্যুৎ চলে গেলে দীর্ঘ সময় অন্ধকারে থাকতে হয় রোগীদের। ইসিজি মেশিন থাকলেও তা সচল থাকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। অপারেটর হাসান বিকাল ৪টার পর থাকেন না, ফলে পরে আর ইসিজি সেবা পাওয়া যায় না। এতে অনেক গুরুতর রোগীকে স্থানীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিতে হয়। চাতরী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. জসীম অভিযোগ করেন, যখন হাসপাতালে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে ডাক্তার দেখাতে যাই, বহিঃবিভাগের সেসব চিকিৎসক ভালোমতো রোগী দেখেনই না। প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে পাঠিয়ে দেন। চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ভুল চিকিৎসায় ইফতেখার (১৩) নামের এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা এ চিত্রকে আরও প্রকট করে তোলে। অভিযোগ অনুযায়ী, চিকিৎসকের বদলে নার্স ইনজেকশন দেন, যা থেকে শিশুটি খিচুনিতে আক্রান্ত হয়। অক্সিজেন না দেওয়ায় ও নার্সদের অবহেলায় শেষ পর্যন্ত মৃত্যু ঘটে।হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধেও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। রোগীদের ইনজেকশন বা সেবা প্রয়োজন হলে নার্সরা রুম থেকে বেরিয়ে আসেন না; বরং রোগীকেই তাদের কাছে যেতে বলা হয়। রোগীদের তথ্য অনুযায়ী, নার্সদের আড্ডা ও দায়িত্বহীন আচরণ সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।আরও অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের টিএইচও ও আরএমও স্থানীয় ‘শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার’এর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। তারা সেখানে রোগী দেখেন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে বিভিন্নভাবে বিশেষ সুবিধা দেন। লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি শর্ত পূরণ ছাড়াই সুবিধা পায়। অন্য ডায়াগনস্টিক মালিকরা বিষয়টিকে পক্ষপাতমূলক ও অনিয়ম হিসেবে দেখছেন।এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ডাক্তারদের সংখ্যা এখন অনেক ভালো। কেউ যদি অফিস শেষে প্রাইভেট চেম্বার করেন, সেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে গাফিলতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ খুব একটা হয় না।  কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা প্রস্তুত থাকি। পূর্বেও হাসপাতালের প্রকল্প অনুমোদন দ্রুত দিয়েছি।এমআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
টিভিতে আজকের খেলা
টিভিতে আজকের খেলা

Source: রাইজিং বিডি

নারকীয় তাণ্ডবে ক্ষত-বিক্ষত রংপুর
নারকীয় তাণ্ডবে ক্ষত-বিক্ষত রংপুর

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দুষ্কৃতকারীদের নজিরবিহীন তাণ্ডবে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে রংপুর। সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য স্থাপনায় ভাঙচুর,

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন