কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের অন্যতম সবজিখ্যাত জেলা মেহেরপুর। জেলার গাংনী উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজে জীবিকা নির্বাহ করে থাকলেও কৃষিসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে মাঠে না গিয়ে অফিসের এসি রুমে বসেই বেতন ও অন্যান্য সুবিধা নিচ্ছেন। ফলে কৃষকেরা সরকারি পরামর্শ ও সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।স্থানীয় কৃষকরা জানান, মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা মেলে না বললেই চলে। পরামর্শ না পেয়ে তারা দোকানদারদের কথামতো কীটনাশক ও সার ব্যবহার করছেন, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ফসল ও কৃষক—দুই-ই।বামন্দী, দূর্লোভপুর, তেরাইল, নিশিপুর ও হাড়াভাঙ্গা এলাকার একাধিক কৃষক জানান, বছরের পর বছর ধরে তারা কৃষিকাজ করলেও কখনও কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে এসে পরামর্শ দিতে দেখেননি।বামন্দী মাঠের কৃষক সাজেদুর রহমান বলেন, কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে আসেন না। এসি রুমে বসে বেতন তোলেন, ঈদের বোনাসও পান। আমাদের কথা ভাবার সময় নেই তাদের।দূর্লোভপুর মাঠের কৃষক বজলুর রহমান, তেরাইল বিলপাড়ার আব্দুল খালেক ও দিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের টাকায় তাদের বেতন হয় আমরা মাঠে পুড়ছি তাদের কোন খোঁজ নেই। এমন কর্মকর্তা দিয়ে আমরা কি করব যারা চাষিদের খোঁজখবরও নেয় না। চাষিদের দুঃখ কষ্ট নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নাই।এসময় দুঃখ প্রকাশ করে নিশিপুর মাঠের কৃষক মিল্টন হোসেন বলেন, যে সকল কৃষি অফিসাররা আছেন তারা তো আমাদের কথায় আসবে না, তারা আসবে বড় লোকের কথায়। আমাদের মত গরিব মানুষের কথা কেউ শোনে না।এদিকে চলতি বোরো মৌসুমে মাজরা পোকার আক্রমণে ধানগাছের শীষ কেটে ফেলছে, ফলে ফলন মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘায় যেখানে ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা, সেখানে ৫-৬ মণ পর্যন্ত কমে যাবে বলে ধারণা তাদের। এত বড় ক্ষতির পরও কৃষি অফিসের কেউ মাঠে আসেননি বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা।হাড়াভাঙ্গা মাঠের কৃষক জিল্লুর রহমান বলেন, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যদি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চাষীদের নিয়ে সভা সমাবেশ করে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে তাহলে চাষিরা সবচেয়ে উপকার পাবে। কৃষি অফিস কতিপয় কিছু চাষীকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে এবং তাদের সাথেই সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখে। কৃষকদের এসব অভিযোগ নিয়ে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনেক সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষকদের খুঁজে পান না। তবে আমরা যদি কোন কৃষকের সমস্যা জানতে পারি তাহলে আমরা সেখানে যাব।এসকে/আরআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর