চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাজিফা আক্তার (৫) নামে এক শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১৮ মে) বিকেল ৫টার দিকে কেরানীহাট-বান্দরবান মহাসড়কের বুড়ির দোকান সংলগ্ন সত্যপীর মাজারের সামনে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু নাজিফা আক্তার সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বায়তুল ইজ্জত গ্রামের আমতলা এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা আরব আমিরাত প্রবাসী আবছার উদ্দিন। পরিবারের আদরের এই শিশুটি ঘুরতে গিয়েছিল বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ (বিজিটিসিএন্ডসি) এলাকায়। নাজিফার চাচা আনছার উদ্দিনের কণ্ঠে বিষাদের ছাপ—”আমার ভাতিজি তার নিকটাত্মীয়দের সাথে বিজিটিসিএন্ডসি এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিল। পরে তারা হাঁটতে হাঁটতে বুড়ির দোকান সংলগ্ন সত্যপীর মাজারের কাছে আসে। রাস্তা পার হওয়ার সময় বান্দরবান থেকে আসা দ্রুতগতির পূরবী বাসের নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।” প্রতিবেশীরা জানায়, নাজিফা ছিল খুবই চঞ্চল ও হাসিখুশি মেয়ে। যে মেয়ে সকালেও সবার সঙ্গে খেলছিল, সেই মেয়ে আজ নিথর দেহ হয়ে ফিরল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কেরানীহাট-বান্দরবান মহাসড়কের ওই অংশে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে দ্রুতগতির যানবাহন ও পথচারীদের অসচেতনতা এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ। প্রশাসনের কাছে দ্রুতগতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং সড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। নাজিফার মা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না তার মেয়ে আর নেই। প্রতিটি মুহূর্তে মেয়ের ফিরে আসার অপেক্ষা যেন তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। একটি নিষ্পাপ শিশুর অকালে চলে যাওয়া কি কোনোভাবেই পূরণীয়? বারবার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কি কোনো শিক্ষা দিচ্ছে না? নিরাপদ সড়ক আর সুস্থ পরিবেশের দাবিতে এই ঘটনা যেন আরেকটি মর্মান্তিক উদাহরণ হয়ে রইল। নাজিফার শোকাহত পরিবারের প্রতি এলাকাবাসীর সহানুভূতি আর সান্ত্বনা জানিয়ে সবাই বলছেন, এভাবে আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ ও চালকের বিচার দাবি করেছে তারা। সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পরপরই বাসের চালক পালিয়ে যায়। পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি আটক করেছে এবং চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর