সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালি প্রবাসী শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে।তাদর সকলের মৃত্যুর কারণের মধ্যে রয়েছে ভবন থেকে পড়ে যাওয়া, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, এমনকি মাথা ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা। সৌদি আরবে অনেক অভিবাসীর মৃত্যুকে প্রাকৃতিক মৃত্যু হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় এবং এর তদন্ত বা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ পাওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘ এবং কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে ।বুধবার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং ফেয়ার স্কয়ার। তারা এই দেশগুলোর শ্রমিকদের মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করেছে। যেখানে এসব মৃত্যুর পেছনে অবহেলা, ক্ষতিপূরণ না দেওয়াসহ অনেক অভিযোগ উঠে এসেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপাল থেকে সৌদি আরবে ২৩ থেকে ৫২ বছর বয়সী ৩১ জন মৃত অভিবাসী শ্রমিকের পরিবারের সাক্ষাৎকার নিয়েছে।তারা এই দেশগুলোর মানুষদের মৃত্যুগুলোর বিস্তারিত তদন্ত করেছে।যেখানে এসব মৃত্যুর পেছনে অবহেলা এবং ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার অভিযোগ খুঁজে পায়। এর মধ্যে এক বাংলাদেশির মৃত্যু সম্পর্কে আলাদাভাবে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটি বলেছে, কর্মক্ষেত্রে এক বাংলাদেশি বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু তার সৌদি মালিক, যার প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করতেন, সেই মালিক তার মরদেহ আটকে রেখেছিলেন। তিনি ওই বাংলাদেশির পরিবারকে বলেছিলেন, যদি তার মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। শুধুমাত্র তখনই তাদের ক্ষতিপূরণ দেবেন তিনি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, যেসব প্রবাসী মারা গেছেন তাদের মৃত্যুর কারণ নিয়েও ভুল তথ্য দিয়েছে সৌদির মালিকরা। তারা মৃত্যুর কারণ তদন্ত করতে দেননি, এতে করে পরিবারগুলো সৌদির আইন অনুযায়ী যে ক্ষতিপূরণ পেত সেটি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এছাড়া প্রিয়জন সৌদিতে কাজ করতে গিয়ে কীভাবে মারা গেল সেটিও এসব পরিবার জানতে পারেননি। অপর একটি পরিবার জানিয়েছে, সৌদির সরকার থেকে আত্মীয়ের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ পেতে তাদের ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।২০৩৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করবে সৌদিআরব।আর বিশ্বকাপের জন্য নতুন নতুন স্টেডিয়ামসহ অনেক বড় বড় অবকাঠামো তৈরি করবে তারা।এগুলোতে কাজ করতে গিয়ে আরও অনেক বাংলাদেশি, ভারতীয় আর নেপালি মারা যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন সময় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করল সংস্থা দুটি। সৌদি ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।এফএস
Source: সময়ের কন্ঠস্বর