দিনে সবকিছু স্বাভাবিক হলেও রাত নামলেই কৃষিজমিতে শুরু হয় মাটির লুট। এস্কেভেটরের চিৎকারে কেঁপে উঠে সুনসান জনপদ। স্থানীয়রা জানতেন, এই তাণ্ডবের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। কিন্তু মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সেই সিন্ডিকেটের ঘাঁটিতে হানা দেয় উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ।চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীরখীল এলাকায় এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন বিশ্বাস। তার সঙ্গে ছিলেন সাতকানিয়া সেনা ক্যাম্পের মেজর ফারহান এবং সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম।স্থানীয় সূত্র জানায়, রাতের আঁধার ভেদ করে হাজীরখীল পয়েন্টে যখন একসাথে সেনাবাহিনীর গাড়ি, পুলিশের গাড়ি ও উপজেলা প্রশাসনের টিম পৌঁছায়, তখন চারদিক অন্ধকার হলেও লুটেরাদের মুখে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। মোবাইল কোর্টের উপস্থিতি টের পেয়েই মাটিখেকোরা পালিয়ে যায়। এর আগেও প্রশাসনের টহল আসার খবর পেয়ে বারবার পালিয়ে বেঁচেছে তারা। তবে এবারের অভিযানে ধরা পড়ে যায় তিনটি ডাম্পার। দুটি এস্কেভেটর বিকল করে দেয়া হয় ঘটনাস্থলেই। তবে গ্রেফতার এড়িয়ে যায় মূল হোতারা।হাজীরখীল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক কৃষি জমির উপরিভাগ ইতিমধ্যেই উজাড় করে ফেলা হয়েছে। একসময় যেখানে ধান–শাকসবজির চাষ হতো, সেখানে এখন গর্ত আর গর্ত।স্থানীয় এক প্রবীণ কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “রাত হলেই ট্রাক আসে। বিশাল বিশাল এস্কেভেটরে আমাদের জমি কাটে। কিছু বললেই ভয় দেখায়।”প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ টপসয়েল ব্যবসা চালিয়ে আসছে প্রভাবশালী মহল। জমির মালিকদের অনেককে ভয়ভীতি দেখিয়ে কম দামে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে সামাজিকভাবে হেনস্তা বা হুমকি দেওয়া হয়।সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, “জনস্বার্থে আমাদের এই অভিযান চলবে। যারা কৃষিজমি নষ্ট করে ব্যক্তিস্বার্থে মাটি বিক্রি করছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গতরাতের অভিযান তারই অংশ। সামনে আরও বড় পরিসরে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”হাজীরখীলের মতো ঘটনা সাতকানিয়ায় নতুন নয়। রাতের আঁধারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে দিনের পর দিন। প্রশাসন অভিযান চালালেও মূল হোতারা বেশিরভাগ সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই ধরণের অভিযান কি আদৌ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দিতে পারবে?জনগণের দাবি, শুধু মোবাইল কোর্ট বা অভিযান নয়, প্রয়োজন স্থায়ী নজরদারি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তা না হলে কৃষিজমির অস্তিত্বই একদিন ইতিহাস হয়ে যাবে।এসআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন
আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন

আজ ১৪৩২ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসের প্রথম দিন। পুষ্প-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে, নতুন সুরের বার্তা নিয়ে সবুজের সমারোহে এসেছে Read more

ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিমদের কী করতে হবে, জানালেন আজহারী
ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিমদের কী করতে হবে, জানালেন আজহারী

ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্ব মুসলিমদের করণীয় কী-সেই বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন দেশের জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। রোববার Read more

ড. ইউনূস-মোদির বৈঠক আশার আলো তৈরি করেছে: মির্জা ফখরুল
ড. ইউনূস-মোদির বৈঠক আশার আলো তৈরি করেছে: মির্জা ফখরুল

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক আশার আলো Read more

হিলিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরির দায়ে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
হিলিতে  অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরির দায়ে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

দিনাজপুরের হিলিতে নোংড়া ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি ও ১টি লাইসেন্সে দুই স্থানে কারখানা চালানোর দায়ে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬০হাজার টাকা Read more

কোটা সংস্কার আন্দলনে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
কোটা সংস্কার আন্দলনে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে।

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন