তীব্র আন্দোলনের চাপে নতিস্বীকার করল অন্তর্বর্তী সরকার। অবশেষে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম। শনিবার (১০ মে) রাতের গভীরতায় উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ জরুরি বৈঠকে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্তের খবর চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেরানীহাট এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই উল্লাসে ফেটে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। ‘এইমাত্র খবর এলো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলো’, ‘আওয়ামী লীগ গেলি কই’-এমন নানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আনন্দ মিছিল করে জনগণ।কেরানীহাটের স্থানীয় বিক্ষোভকারীরা বলেন, “এতদিন আমরা শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে রাস্তায় ছিলাম। আজ আমাদের বিজয় হলো। আমরা মুক্ত।” ওই মিছিলে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ অংশ নেন।শনিবার রাতের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী এনে এখন থেকে কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন কিংবা সমর্থক গোষ্ঠীকেও ট্রাইব্যুনাল বিচারের আওতায় আনা যাবে। সংশোধনী অনুমোদনের পরপরই পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয়—বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে।পরিষদের একাধিক সদস্য বৈঠকে বলেন, “দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং চলমান জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মী ও ট্রাইব্যুনালের বাদী-সাক্ষীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত জরুরি।”সিদ্ধান্ত অনুসারে, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সশরীরে ও ভার্চুয়াল—উভয় মাধ্যমেই সব ধরনের সংগঠন, সমাবেশ, প্রচার ও সাইবার কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র আগামী কর্মদিবসে জারি করা হবে বলেও জানানো হয়।একই বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে। ঘোষণাপত্রটিকে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ রূপরেখা হিসেবে দেখছে প্রশাসন।গত তিন দিন ধরে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের হাজারো মানুষ টানা কর্মসূচি পালন করছিলেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে। কেরানীহাটসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে মিছিল-মিটিংয়ের খবর আসছিল। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্ত বহুজনের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করল বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা।এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর