টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চাঁদা না দেওয়ায় ফারুক হোসেন নামে এক যুবদল নেতাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক লাল মাহমুদ খান ওরফে লাল খাঁর বিরুদ্ধে।রবিবার (০৪ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার বামনহাটা বাজার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত ফারুক হোসেন ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এবং পেশায় একজন ঠিকাদার। ঘটনার পর ফারুকের ছোট ভাই মেহেদী হাসান বাদি হয়ে ভূঞাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।ভুক্তভোগীর ছোট ভাই মেহেদী হাসান অভিযোগ করে বলেন, একটি নির্মাণকাজকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা লাল খাঁ তার ভাই ফারুকের কাছে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ফারুক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে হুমকি দেওয়া হয়—“তুই কাজ করলেও ৬ লাখ দিবি, না করলেও দিবি, না হলে হাত-পা ভেঙে ফেলব।”তিনি আরও জানান, রড কেনার জন্য রবিবার বিকেলে তার ভাই ৫ লাখ টাকা নিয়ে বামনহাটা বাজার এলাকায় পৌঁছালে পরিকল্পিতভাবে লাল খাঁ, তার ভাই ও ছেলে মিলে ফারুকের ওপর হামলা চালায়। হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক মারধরের পর তার সঙ্গে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুককে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় আঘাত গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ০৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছেন লাল খাঁ। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় জুয়ার বোর্ড বসানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। তখন প্রতিবাদ করায় জমির মালিক যুবদল নেতা মিল্টনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দেন তিনি। যা নিয়ে ‘সময়ের কণ্ঠস্ব’রসহ একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে লাল খাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানান পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। যদিও পরে অদৃশ্য কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা লাল খাঁ সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ভূঞাপুরে ছিলাম। হঠাৎ শুনি আমার ছেলেকে মারতেছে। পরে গিয়ে দেখি, আমার ছেলেকে মেরে ১০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে।’ এসময় চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমার নাম ব্যবহার করে কেউ একজন ফেক আইডি থেকে চাঁদা দাবি করেছে, এর সঙ্গে আমি জড়িত নই।’ এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব হোসেন কফিল বলেন, দলের মানুষ যদি দলের কাছেই নিরাপদ না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপদ থাকবে? আমি চাই না এমন কেউ আমাদের দলে থাকুক। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু বলেন, দল চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় যেহেতু থানায় অভিযোগ হয়েছে, সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আর আমি পৌর বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের দিকেও আহ্বান জানাব, যেন তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন।জানতে চাইলে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম রেজাউল করিম সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, মারধরের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এসকে/আরআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর