ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দেখা দিয়েছে গুরুতর উদ্বেগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হল, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদসহ বিভিন্ন আবাসিক ও একাডেমিক ভবনে থাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও পরিবর্তন করা হয়নি এখনো। এসব যন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডারগুলোর মেয়াদ গত ২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে উত্তীর্ণ হলেও এখনো একই স্থানে ঝুলছে। কিছু যন্ত্রের মেয়াদের তারিখ ঘষে মুছে যাওয়ায় পড়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ হাসান খান বলেন, “আমরা হলে থাকি, ক্লাস করি, কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দেখে ভয় লাগে। কোনো অঘটন ঘটলে এগুলো কাজ না করলে কী হবে?” বিদ্রোহী হলের শিক্ষার্থী মোখলেসুর রহমান বলেন, “যন্ত্রগুলো দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে দেওয়ালে ঝুলছে। কেউ এগুলো পরীক্ষা বা রক্ষণাবেক্ষণ করছে না।” অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রে সাধারণত উচ্চচাপে কার্বন ডাই-অক্সাইড বা ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্রের চাপ কমে যাওয়া বা রাসায়নিক উপাদানের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একজন কর্মকর্তা বলেন, “মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্র অকেজো হতে পারে। আগুনের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়। ভুল বা মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্র ব্যবহারে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।” এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আশরাফুল আলম বলেন, “সরকার অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বাজেট দিলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয় না। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম দ্রুত পরিবর্তন করা যায় না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান জানান, “বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্রগুলো পরিবর্তন করা হবে।” এদিকে, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, “ক্যাম্পাসের যেসব স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে, সেখানে দায়িত্বরতদের কাছে চাহিদাপত্র চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চাহিদাপত্র পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর