ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে খড়িয়া নদী। এক যুগ আগেও নদীটি ছিল খরস্রোতা। সারা বছর ছিল বুক ভরা অথৈ জল। প্রতিনিয়ত আনাগোনা ছিল নানা জাতের ডিঙ্গি নৌকার। সেই খরস্রোতা খড়িয়া নদী ভরাট হয়ে এখন ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে।  জানা যায়, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা হয়ে খড়িয়া নদী ফুলপুরের রামভদ্রপুর, ভাইটকান্দি, পয়ারী, রূপসী ও ফুলপুর ইউনিয়নের বুক চিরে প্রায় ৩৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কংস নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ৪০ বছর আগেও পূর্বাঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিরাট ভূমিকা রাখত এই খড়িয়া নদী। বিভিন্ন জেলার বড় বড় সওদাগর মালবাহী নৌকা ও লঞ্চ নিয়ে হাজির হতেন ফুলপুরের বিভিন্ন ঘাটে। নৌপথে মালামাল পরিবহণ সুবিধায় এ নদীকে কেন্দ্র করে ফুলপুরের রামভদ্রপুর, বাহাদুরপুর, আমুয়াকান্দা, ছনকান্দা, রূপসী, ডেফুলিয়াসহ ছোট বড় অনেক হাটবাজার গড়ে উঠেছিল। ২৫ বছর আগেও ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট ও ফুলপুর উপজেলার অনেক লোকজন নদীপথে নৌকায় যাতায়াত ও মালামাল পরিবহণ করতেন। খড়িয়ার সঙ্গে কংশ ও ব্রহ্মপুত্রের সংযোগ থাকায় নৌপথে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করা যেত। জেলেসহ আশপাশের লোকজন সারা বছর নদীতে মাছ আহরণ করতেন। সময়ের বিবর্তনে আজ এসব শুধুই ইতিহাস। এলকাবাসীর অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ রামভদ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে স্লুইস গেট নির্মাণ করেছে। এতে পানিপ্রবাহ কমে গিয়ে দিন দিন নদীটি ভরাট হয়ে ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমেও নদীতে স্রোত না থাকায় কচুরিপানায় ভরে যায়। ফলে সেই সময়েও নৌচলাচল সম্ভব হয় না। চরনিয়ামত গ্রামের শিক্ষক সকান্দর হোসেন জানান, নদীকে বাঁচাতে ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থলসহ সর্বত্র খনন করতে হবে। রূপসী বাজারের ব্যবসায়ী মজিবর রহমান জানান, বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি থাকলেও রূপসীতে নির্মিত ব্রিজের উচ্চতা কম থাকায় নিচ দিয়ে নৌকা যাতায়াত করতে পারে না। এ নদী খননের পাশাপাশি ব্রিজের উচ্চতা বাড়ালে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। ফুলপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী একেএম সিরাজুল হক জানান, আগে নদীর পাড় দিয়ে যাতায়াত করা যেত। অবৈধ দখলে পাড়গুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অনেকে আবজর্না ফেলে ও পয়ঃনিষ্কাশনের লাইন দিয়ে পরিবেশ দূষণ করছে। এসআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন