দলের স্বার্থের পরিপন্থী এবং মর্যাদাহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে।বুধবার (৩০ এপ্রিল) দলীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে এ নোটিশ জারি করে বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর। দুই নেতাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।নোটিশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার প্রদানকালে এই দুই নেতা এমন কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, যা দলের শিষ্টাচারবোধ, নীতি এবং মর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, উক্ত সাক্ষাৎকারে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অশালীন ও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহৃত হয়—যা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে।নোটিশে আরও বলা হয়, “ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যেভাবে দলের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শিষ্টাচার বহির্ভূত ভাষায় বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা দলের জন্য মর্যাদাহানিকর। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মুখে এমন অশোভন শব্দ প্রয়োগ শুধু নেতিবাচক বার্তাই দেয় না, বরং দলের দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক ঐতিহ্যের সঙ্গেও এটি বেমানান।” এ প্রেক্ষিতে কেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপির নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, “আমি দলের একজন সিনিয়র সদস্য। সাংগঠনিক নিয়মের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। তাই যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করব।” তিনি আরও বলেন, “যে সাক্ষাৎকার নিয়ে এত কথা, সেখানে আমি কারো নাম বলিনি। আমি শুধু টেলিভিশনে প্রচারিত সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে প্রশ্ন রেখেছিলাম ওই সন্ত্রাসীরা কার লোক? এই প্রশ্নের জবাব যদি খোঁজা হতো, তাহলে অনেক কিছুর উত্তর পাওয়া যেত এবং হয়তো আজ আমাকে নোটিশ পেতে হতো না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার চারজন সমর্থককে হত্যা করা হয়েছে, এবং হত্যাকারীরা চিহ্নিত, অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।অপরদিকে, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, “শোকজ হলো রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কাঠামোর একটি স্বাভাবিক অংশ। কেউই সংগঠনের ঊর্ধ্বে নয়। দল যদি মনে করে যে কোনো বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হবে, তাহলে সেটির ব্যাখ্যা চাওয়া সংগঠনের অধিকার।” তিনি জানান, “আমি যথাসময়ে শোকজের জবাব দাখিল করব।”বিএনপির অভ্যন্তরে এই দুই নেতার বক্তব্যকে ঘিরে সৃষ্টি হওয়া বিতর্ক দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষার চ্যালেঞ্জকেই সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে। যেখানে একদিকে নেতারা নিজেদের বক্তব্যকে যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন, অন্যদিকে দলীয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেটিকে বিবেচনা করছে রাজনৈতিক সৌজন্যবোধের পরিপন্থী পদক্ষেপ হিসেবে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিনের বিরোধী রাজনীতিতে দলীয় নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক, তবে বক্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে কৌশলগত পরিপক্বতা ও দলের ভাবমূর্তি রক্ষাই একজন সিনিয়র নেতার দায়িত্ব। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতৃত্ব যে বার্তা দিতে চায়, তা হলো—দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে কোনো শিথিলতা নেই।এসআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে পালালেন স্বামী
হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে পালালেন স্বামী

কক্সবাজারের উখিয়ায় স্বামী-স্ত্রী'র কলহের জেরে শোভা আক্তার (২০) নামের এক তরুণী'র আত্ম হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আত্মহত্যার পরে স্বামী টের পেলে Read more

সমন্বয়কদের নিরাপত্তা ইস্যুতে পুলিশের চিঠি পাঠানো নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে
সমন্বয়কদের নিরাপত্তা ইস্যুতে পুলিশের চিঠি পাঠানো নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে

জাতীয় নাগরিক কমিটি নামে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে আত্মপ্রকাশের পরই বিভিন্ন জেলায় সফরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদর দপ্তর Read more

জীবননগরে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
জীবননগরে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে এক প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান।শনিবার Read more

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন