বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে চার দফা দাবিতে অভিনব ও প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটায় ক্যাম্পাসে ‘কফিন মিছিল’ ও ‘গায়েবানা জানাজা’র আয়োজন করে তারা।প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা ও দমননীতি’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রতীকীভাবে ‘মৃত’ ঘোষণা করে মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে গিয়ে ‘গায়েবানা জানাজা’ পড়েন তারা।পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে ‘মৃত প্রক্টর’ লিখিত পোস্টার টানিয়ে অফিসটি সিলগালা করেন এবং সেখানে একটি কফিন স্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের ব্যর্থতার উপাখ্যান ও শিক্ষার্থীদের হাহাকার’ শিরোনামে একটি ব্যানার গ্রাউন্ড ফ্লোরে টানিয়ে দেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন।শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, টানা ১০ দিন ধরে তারা চার দফা দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে এলেও প্রশাসন কোনো সদুত্তর দেয়নি। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে পূর্বে হয়রানিমূলক মামলা ও সাম্প্রতি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এতে আন্দোলন দমন করার অপচেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো- ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনা ‘মিথ্যা’ অভিযোগ প্রত্যাহার এবং তাঁকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলে পুনর্বহাল করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও আওয়ামী লীগ পদধারী মো. মনিরুল ইসলামকে অপসারণ। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের সমর্থক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপসারণ। ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের দায় স্বীকার করে উপাচার্যের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, আমরা গত ১০ দিন ধরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাসিস্টদের বিদায়ে আন্দোলন করছি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো দাবী মেনে নেয়নি এমনকি গতকাল আমরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করলে পুলিশ, সেনাবাহিনী প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা আমাদের সাথে দেখা পর্যন্ত করতে আসেনি। সুতরাং আমরা মনে করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন মারা গেছে সেকারনে আমরা আজকে প্রতীকী জানাজা ও কফিন মিছিল করেছি।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আশিক আহমেদ বলেন, গত কয়েকদিন আমরা যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্য আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখজনক যে গতকাল আমরা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নূনতম ভ্রুক্ষেপ করেনি এবং যোগাযোগ ও করেনি। এমতাবস্থায় আমাদের মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মৃত হয়ে গেছে এবং তাদের আমরা মৃত ঘোষণা করে এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসাইন বলেন, প্রশাসন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে একটি দমনমূলক পরিবেশ তৈরি করেছে। এই অবস্থার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে।এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর