নড়াইল সদর উপজেলার কমলাপুর ও গন্ধবখালী এলাকায় বিগত ১০ বছর ধরে দুটি সেচ পাম্প বন্ধ থাকায় জমি চাষে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকেরা। এক সময়ে এই দুটি সেচ পাম্প ছিল কৃষকদের জন্য সহজ পানির উৎস। নদী থেকে সরাসরি জমিতে পানি সরবরাহ করা হত এ সেচ পাম্পের মাধ্যমে। ফলে কৃষকেরা কম খরচে তিনটি ফসল উৎপাদনের সুযোগ পেতেন। কিন্তু বিগত ১০ বছর ধরে সেচ পাম্প দুটি বন্ধ থাকায় চাষিদের স্বল্প খরচে পানি ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কমলাপুর ও গন্ধবখালী এলাকার প্রায় ৫৪০ একর জমি চাষে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকেরা। সেচ পাম্প চালু না থাকায় তাদের অন্য উপায় বেছে নিতে হচ্ছে। ডিজেলচালিত শ্যালোমেশিন দিয়ে পানি সরবরাহ করতে গিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়ছে কৃষকেরা।নাকশি গ্রামের কৃষক টুটল মোল্যা সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, এই মাঠে নাকশি, কমলাপুর, ঘোষপুর তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের জমি আছে। সেচ পাম্প চালু থাকায় তিন গ্রামের বাসিন্দারা এই পানির সুফল ভোগ করত। এ মাঠে আমার ৯০ শতক জমিতে ধানের আবাদ করেছি। সেচ পাম্পটি চালু হলে প্রথম দিকে বিনামূল্যে পানি পেতাম। পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ বিলের অযুহাত দেখিয়ে টাকা নেওয়া শুরু হল। এখন অচল হয়ে পড়ে আছে। সেচ পাম্পটি চালু হলে তিন গ্রামের কৃষকরা স্বল্প মূল্যে ধান, পাটসহ অন্যান্য ফসলে পানি দিতে পারত।পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে দক্ষিণ-পশ্চিমা অঞ্চলের পানি সম্পদ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সেচ পাম্প দুটি স্থাপন করা হয়েছিল। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল ৫৪০ একর জমিতে স্বল্প মূল্যে সেচ সুবিধা প্রদান করা। সেচ পাম্প দুটি বন্ধ হওয়ায় কৃষি উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। ২০১৯ সালে সেচ পাম্পগুলো মেরামতের জন্য ৩৫ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেটি বাস্তবায়িত হয়নি।কমলা পুর গ্রামের কৃষক চুন্নু গাজি সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ‘৯ থেকে ১০ বছর এই সেচ প্রকল্পের আওতায় আমরা ফ্রি পানি নিতাম। পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডে সমতি করল। সমিতির মাধ্যম যখন গেল তখন তারা বিদ্যুৎ বিলের কথা বলে টাকা নেওয়া শুরু করল। ৩ শতক জমিতে ৯ টাকা দিতাম। পরে শুনলাম বিদুৎ বিল হাজার হাজার টাকা বাকি হয়ে গেছে। তারপর থেকে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বর্তমানে এক কানিতে ১শ টাকা করে খরচ হচ্ছে। সেচ প্রকল্পটি চালু থাকা সময়ে আমি ধান, পাট চাষ করে অনেক উপকৃত হয়েছি। স্বল্প মূল্যে জমিতে পানি দিতে পারতাম। এখন মেশিন দিয়ে পানি দিতে গিয়ে অধিক টাকা খরচ হচ্ছে। সেচ পাম্পটি চালু থাকলে আমিসহ এলাকার অনেক কৃষক উপকৃত হত।’পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ‘সেচ পাম্প দুটি চালু করতে চাহিদা পত্র দিয়েছি। বাজেট বরাদ্দ হলে দ্রুত মেরামত কার্যক্রম শুরু করা হবে।’এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর