দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বাসুলী গ্রামে মরিয়মবাজার সংলগ্ন কালামাটিয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে এক পাশে সংযোগ সড়কবিহীন পড়ে আছে। ফলে আশপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের সাঁকো ব্যবহার করে চলাচল করছেন।জানা যায়, ২০১৪ সালের ১০ মে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় প্রায় ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৭১৮ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। নির্মাণের পর কিছুদিন ব্যবহারযোগ্য থাকলেও ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় সেতুটির এক পাশের সংযোগ সড়ক সম্পূর্ণভাবে ভেঙে যায়। এরপর দীর্ঘ আট বছরেও সেই সড়কটি আর মেরামত করা হয়নি।বর্তমানে সেতুর একটি পাশ ব্যবহারযোগ্য থাকলেও অপর পাশে রয়ে গেছে ফাঁকা জায়গা। ফলে পারাপারের জন্য বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি অস্থায়ী সাঁকোর ওপর নির্ভর করছেন। বর্ষা মৌসুমে এই সাঁকো হয়ে ওঠে আরও ভয়ানক। রোগী, শিশু ও বৃদ্ধদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।এলাকাবাসী জানান, এই সেতুটি আশপাশের দশটি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষ ও কৃষিপণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে এই পথে। কিন্তু রাস্তা না থাকায় সেতুটি কার্যত অকেজো হয়ে রয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম বলেন, সেতুর এক পাশে গিয়েই থেমে যেতে হয়। কাঠের সাঁকো দিয়ে চলাচল খুবই কষ্টকর।গ্রামবাসী মহির উদ্দিন বলেন, দশটি গ্রামের মানুষ এই সেতু ব্যবহার করে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর কোনো সুফল পাচ্ছি না।ভ্যানচালক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কাঠের সাঁকো দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। রোগী বা বয়স্ক মানুষ নিয়ে পার হতে গেলে আতঙ্ক লাগে।গত ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সেতুটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। কিন্তু এরপরেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবি, সেতুর সংযোগ সড়ক দ্রুত পুনর্নির্মাণ করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করা হোক। নয়তো বহু অর্থে নির্মিত এই সেতু উন্নয়নের বদলে দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে থাকবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে খানসামা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। ইতিমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান টেন্ডার হলে কাজ শুরু হবে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর