জার্মানে নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার (৭৩) মারা গেছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক নিরাময় কেন্দ্রে মৃত্যু হয় তার। দাউদ হায়দারের ভাতিজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২০ মিনিটে মারা গেছেন তার চাচা। ১৯৭৪ সালে দেশ ছাড়ার পর কয়েকবছর কলকাতায় কাটিয়ে ১৯৮৭ সালে সেখান থেকে জার্মানিতে চলে যান দাউদ হায়দার। কবি বার্লিনের রাইনিকেডর্ফ এলাকায় একটি ভবনের ১২ তলায় একটি ফ্লাটে একাকী থাকতেন। চিরকুমার দাউদ হায়দার আগে থেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। সবশেষে, ২০২৪ এর ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় আঘাত পান। সে সময় তাকে হাসপাতালের আইসিইউতেও নিতে হয়। এরপর হাসপাতাল ছাড়লেও আর সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেননি দাউদ হায়দার। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনায় দাউদ হায়দারের জন্ম। তিনি একাধারে কবি, লেখক এবং তিনি দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন।ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে ১৯৭৪ সালে কবি দাউদ হায়দার নির্বাসিত হয়েছিলেন।কারন ৭৪ এর ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হলে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে সেসময় তার বিরূদ্ধে মামলা হয়। কারণ কবিতার এক পংক্তিতে তিনি নবিজি (সা.) ও যিশুখ্রিষ্টকে গালি দেন। তিনি গৌতম বুদ্ধকেও গালি দিয়েছেন। এরপর শুরু হয় তার বিরুদ্ধে আন্দোলন, পরে ১১ মার্চ তাকে আটক করে পুলিশ। জনরোষ থেকে বাঁচাতে তাকে জেলে রাখা হয়। জেলখানায় তাকে কয়েদিরা মারপিট করে। কিছুদিন পর জেল থেকে মুক্তি দিয়ে ২১ মে সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়। স্বাধীনতার পর দাউদ হায়দারই প্রথম লেখক, যাকে লেখালেখির কারণে নির্বাসনে যেতে হয়। ৫০ বছর ধরে তিনি নির্বাসনে ছিলেন। এজীবিত অবস্থায় এরপর তিনি আর দেশে ফিরতে পারেননি। কোনো সরকারই তাকে আসার অনুমতি দেয়নি।এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর