বাঁশখালীতে ‘বেহেশতের লোভ দেখিয়ে’ প্রতারণার মাধ্যমে এস্তফিজুর রহমান নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধীর সম্পত্তি লিখে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম আঞ্জুমান-এ রহমানিয়া আহমদীয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের পক্ষে কিছু ব্যক্তি পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বৃদ্ধ ও মানসিক প্রতিবন্ধী এস্তফিজুর রহমানের সম্পতি লিখে নেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।অনেক বছর বিষয়টি গোপন রাখার পর সম্প্রতি বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কোকদন্ডী গ্রামের ওই সম্পত্তি আন্জুমানের পক্ষে দখলে নেয়ার উদ্যোগ নিলে বিষয়টি ফাঁস হয়। ২০০৭ সালে এস্তফিজুর রহমান মারা যান। এতো বছর পর এসে জায়গা দখল করতে যাওয়া আঞ্জুমানের লোকজনের সাথে এস্তফিজের পরিবারের সদস্যরা এখন মুখোমুখি। এনিয়ে এস্তফিজুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের পক্ষে প্রতারণার মাধ্যমে আঞ্জুমানের জাল দলিল সৃষ্টির অভিযোগ এনে সম্পত্তি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালীর কালীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কোকদন্ডী গ্রামের এমদাদ আলীর ছেলে এস্তফিজুর রহমান ছিলেন মানসিক প্রতিবন্ধী। ২০০৭ সালে ৭৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান। ২০০৪ সালে এস্তফিজুর রহমানের কাছ থেকে একটি দানপত্র দলিল নেন আঞ্জুমানের লোকজন। দলিলে ৮৩ শতক সম্পত্তি উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া দানপত্রের ওই দলিলে পরিবারের সদস্যদের সম্মতিতে দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও বাস্তরে পরিবারের কেউ বিষয়টি জানতো না। এমনকি এস্তফিজুর রহমানের স্ত্রীও তখন বেঁচে ছিলেন। তিনিও এই দলিল সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।লিখিত অভিযোগে এস্তফিজুর রহমানের ছেলে আনোয়ারুল আজিম জানান, কিছু দিন আগে তারা আমাদের সাথে কথা বলে আঞ্জুমানের লোকজন ওই দলিল বাতিল করবেন বলে আমাদের আশ্বাস দিলেও আর কোন খোঁজ খবর নেননি।তিনি আরও বলেন, আমার বাবা যখন ২০০৭ সালে মারা যান তখন ওনার বয়স ছিল ৭৫ বছর। অথচ ২০০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী সৃজিত উক্ত দলিলে আমার বাবার বয়স লেখা হয় ৩৭ বছর। আমার বাবা প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থ ছিলেন।আনোয়ারুল আজিম অভিযোগ করেন, আমার বাবা আঞ্জুমানের ভক্ত ছিলেন, এই সুযোগে আঞ্জুমানের লোকজন আমার বাবাকে বেহেশতের লোভ দেখিয়ে ফুসলিয়ে এমন অমানবিক কাজ করা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন ইসলামী বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলেছি, তারা আমাদের জানিয়েছে গোপনে পরিবারের অজান্তে একজন অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে নেয়া দানপত্র শরীয়ত মোতাবেকও বৈধ হয়নি।আঞ্জুমানের লোকজন বর্তমানে ওই জায়গা দখল করে আমি ও আমার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে পরিকল্পনা ও হুমকি দিচ্ছে। এনিয়ে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকায় আমরা আতংকিত অবস্থায় দিন পার করছি।আঞ্জুমানের বাঁশখালী উপজেলা প্রতিনিধি মাওলানা আবদুর রহিম সিরাজী জানান, জায়গাটি আনোয়ারের বাবা এস্তফিজুর রহমান আঞ্জুমান-এ রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টকে দলিল মূলে দান করে দেন। আঞ্জুমান ওনার কাছ থেকে জায়গা নিতে চায়নি। তবুও আবেগ দিয়ে তিনি আঞ্জুমানকে সম্পত্তি লিখে দেন। আমরা পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা ও রফাদফা করার চেষ্টা করছি। এস্তফিজুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নিয়েই সেখানে খানেকা হবে।বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার এমন একটি অভিযোগ আমার কার্যালয়ে জমা হয়েছে। আমি এখনো বিস্তারিত জানি না। খবর নিয়ে দেখব।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর