ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে অবৈধ মাটির ব্যবসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে আওয়ামী লীগ ও যুবদল নেতার নেতৃত্বে মাইনুদ্দীন রুবেল নামে এক সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে এই হামলা হয়। হামলার শিকার মাইনুদ্দীন বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা। দৈনিক দেশ রূপান্তর ও রাইজিং বিডি টোয়েন্টিফোর ডটকমের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা।জানা গেছে, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাইয়ুম মিয়া উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছেন। পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন পুকুরসহ ফসলি জমি অবৈধভাবে ভরাটের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রাতদিন ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন কাইয়ুম। তার এ কাজ দেখাশোনা করছেন ছেলে মো. মুন্না, রাসেল মিয়া, মোবারক হোসেন, চাচাতো ভাই রুবেল মিয়া ও ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনিছ মিয়া। এসব কাজে সহায়তা করছেন বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মোখলেছুর। তাদের এমন অবৈধ কারবার নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন করেন সাংবাদিক মাইনুদ্দীন রুবেল।এছাড়া অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সাংবাদিক মাইনুদ্দীনের প্রতিবেদনের পর বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলীকে সম্প্রতি পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। অবৈধভাবে মাটি কাটা এবং সাবেক ওসি রওশন আলীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে মাইনুদ্দীনের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন অভিযুক্ত কাইয়ুম, মোখলেছুর এবং তাদের সহযোগীরা।প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে বিজয়নগর থানার উদ্দেশে রওনা হন মাইনুদ্দীন। বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা মোখলেছুর, কাইয়ুম, তার ছেলে মুন্না, রাসেল মিয়া ও মোবারক হোসেন, কাইয়ুমের চাচাতো ভাই রুবেল মিয়া, ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনিছ মিয়া ও উপজেলা যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা মোখলেছুর ৩০-৪০ জন সহযোগী নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান।এ সময় সঙ্গে থাকা ভাগিনা মো. সোহাগ, স্থানীয় মো. শিপনসহ কয়েকজন মিলে চেষ্টা করেও সাংবাদিক মাইনুদ্দীনকে তাদের কাছ থেকে রক্ষা করতে পারেননি। হামলায় সাংবাদিক মাইনুদ্দীন মাথার ডানপাশে আঘাত পান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। হামলায় মাইনুদ্দীনের মাথার ডানপাশে ছয়টি সেলাই লেগেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।হামলার শিকার সাংবাদিক মাইনুদ্দীন রুবেল বলেন, মাটি কাটার নিউজ করায় কাইয়ুম, তার ছেলেরা ও ভাইয়েরা আমার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। বাড়ির সামনে পেয়ে লিটন মুন্সি ও কাইয়ুমের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে। কাইয়ুম নিজে আমাকে মেরেছে। তারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। আহত সাংবাদিক মাইনুদ্দন রুবেলের ভাগিনা সোহাগ মিয়া ও স্থানীয় শিপন মিয়া বলেন, আমরা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। তারা মামার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করেছে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে আমরাও আহত হয়েছি। এদিকে একাধিকবার চেষ্টা করেও অভিযুক্ত বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সি ও কাইয়ুম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।ইউপি সদস্য আনিছ মিয়া বলেন, আমি তো দৌড়ে গেছি। তার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওরা বাড়ির সামনে এসে ঝগড়া করেছে। আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে। সেটা তো কিছু বলছেন না। বিজয়নগর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর